নির্বাচনী প্রচারে গাইলেন নুসরাত

শেয়ার করুন প্লিজ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে জোরকদমে চলছে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার। বিভিন্ন দল বেশির ভাগ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। সর্বাগ্রে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারাই প্রথম পশ্চিমবঙ্গে লোকসভার ৪২ আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। এখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ঘোষিত প্রার্থী তালিকার সদস্যরা মাঠে নেমে পড়েছেন।

তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের পাঁচটি আসনে পাঁচজন তারকা প্রার্থী দিয়েছে। এর মধ্যে দুজন একেবারে নতুন। নুসরাত জাহান ও মিমি চক্রবর্তী। গত শনিবার থেকে নুসরাত জাহান নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়েছেন। চষে বেড়াচ্ছেন তাঁর নির্বাচনী এলাকা। সুন্দরবনের সন্দেশখালীতে প্রথম প্রচার সভায় দলের কর্মীদের অনুরোধে নুসরাত জাহান সিনেমার একটি গান গেয়ে শোনান। ‘লাভ এক্সপ্রেস’ ছবির গানের কলি হলো ‘মন বলেছে আমার, আজ সঙ্গে যাবে তোর।’

সুন্দরবনের মিনাখাঁ, হাড়োয়া, সরবেড়িয়া এলাকায় সভা করেছেন তিনি। বলছেন, ‘আমি আপনাদের জন্য নিয়োজিত থাকব। আপনাদের ডাকে সাড়া দেব। যখনই ডাকবেন আমি চলে আসব। আমার ফোন নম্বর রাখা আছে জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে। ওখানে ফোন করলেই আমাকে পাবেন।’

পাঁচটি আসনের মধ্যে একটি হলো উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট কেন্দ্র। বসিরহাট কলকাতা লাগোয়া এবং মুসলিম–অধ্যুষিত এলাকা। এই কেন্দ্রে এবার তৃণমূলের প্রার্থী চিত্রনায়িকা নুসরাত জাহান। তিনি বসিরহাট কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে প্রার্থী হয়েছেন। রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ ২৯ বছর বয়সী নুসরাত জাহান। তিনি চলচ্চিত্রের ইমেজকে সম্বল করে নির্বাচনী ময়দানে নেমেছেন।


নুসরাত জাহান বাংলা চলচ্চিত্রের উঠতি এক নায়িকা। জনপ্রিয় পশ্চিমবঙ্গে। ২০১১ সালে রাজ চক্রবর্তীর ‘শত্রু’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর চলচ্চিত্রজীবন শুরু হয়। এখন পর্যন্ত তিনি ১৮টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাঁর জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে এবার বসিরহাট কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে প্রার্থী করেছে। এই কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ আইনজীবী ইদ্রিস আলীকে সংসদ নির্বাচন থেকে এবার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই আসনে জিতেছিলেন ইদ্রিস আলী। তিনি তাঁর নিকটতম প্রার্থী সিপিআইয়ের নুরুল হুদাকে হারিয়েছিলেন ১ লাখ ৯ হাজার ৬৫৯ ভোটের ব্যবধানে। নুরুল হুদা পেয়েছিলেন ৩ লাখ ৮২ হাজার ৬৬৭ ভোট। আর তৃতীয় স্থানে ছিল বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য। তিনি পেয়েছিলেন ২ লাখ ৩৩ হাজার ৮৮৭ ভোট।


এই আসনে বিজেপি প্রার্থী করেছে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুকে। আর বাম দল সিপিআই প্রার্থী করেছে পল্লব সেনগুপ্তকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এখানে এখন পর্যন্ত নুসরাত জাহানের পাল্লা ভারী থাকলেও তাঁকে ত্রিমুখী লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে।

সায়ন্তন বসু গতকাল রোববার বসিরহাটে প্রচারে গিয়ে বলেছেন, ‘এবার আর কাউকে নির্বাচনে রিগিং করতে দেওয়া হবে না। একটা মশাও ঢুকতে পারবে না। মশা মারতে যদি কামান দাগাতে হয়, তা–ই দাগাব। তবে কাউকে রিগিং করতে দেওয়া হবে না।’ তিনি এ কথাও বলেছেন, ‘যত মাস্তান দাদারা আছেন, তাঁরা এক্ষুনি পালিয়ে যান। যদি কেউ রিগিং করতে আসেন, তবে তাঁদের গুলি করা হবে।’

কয়েক দিন আগে বসিরহাটে বিজেপির কর্মীরা দেয়াললিখনে গেলে তৃণমূলের সমর্থকেরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে সায়ন্তন বসু একহাত নেন তৃণমূলকে। সায়ন্তন বসু বলেন, তিনি এবার ভোট দেবেন মোদিজির পদ্মফুলকে। জিতবেন তিনি। মানুষ এখনো তাঁর পাশে আছেন। মানুষ জানে, কার কাছ থেকে মানুষ কাজ পাবে। কে থাকবে তাদের পাশে।

বাম দল সিপিআইয়ের হাতে একসময় এই আসনটি ছিল। এবারও বামফ্রন্ট এই আসনে সিপিআই নেতা পল্লব সেনগুপ্তকে প্রার্থী করেছে।

বাম দল চায় এবার তারা ত্রিমুখী বা চতুর্মুখী লড়াইয়ে জিতে যাবে।
শেয়ার করুন প্লিজ

লেখক : verified_user

0 comments: