Showing posts with label রাজনীতি. Show all posts
Showing posts with label রাজনীতি. Show all posts
শাখারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক ছাত্রনেতা প্রভাষক কামরুল হুদা উজ্জ্বল।

শাখারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক ছাত্রনেতা প্রভাষক কামরুল হুদা উজ্জ্বল।



শাখারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ নিবার্চন কে সামনে রেখে শাখারিয়া ইউনিয়নে গণসংযোগ ও মত বিনিময় করেন চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক ছাত্রনেতা প্রভাষক কামরুল হুদা উজ্জ্বল।
তিনি এ সময় শাখারিয়া ইউনিয়ন বাসীর উদ্দেশ্যে বলেন বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্য ধরে রাখতে দল মত নির্বিশেষে  সবাইকে একসাথে কাজ করতে আহব্বান জানান তিনি আরো বলেন যুবসমাজ যে কোন দেশের মূল্যবান সম্পদ জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি যুব সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহনের উপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল।তাই তিনি তার নিজ এলাকার যুব সমাজকে  সঙ্গে নিয়ে কাজ করার কথা বলেন

সবশেষে একটা কথাই বলবো আমার ভোট আমি দিবো যাকে খুশি তাকে দিবো সৎ সুশিক্ষিত ও যোগ্য বেক্তিকে দেবো

উপনিবার্চন ৬ নং শাখারিয়া ইউনিয়ন

উপনিবার্চন ৬ নং শাখারিয়া ইউনিয়ন


৬ নং শাখারিয়া ইউনিয়ন এর উপনিবার্চন সামনে রেখে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা ও বর্তমান সদর উপজেলা যুবলীগ এর সহ-সভাপতি এবং বগুড়া মহিলা কলেজের প্রভাষক,সচ্ছ রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব,আমাদের সবার প্রিয়,জনাব,কামরুল হুদা উজ্জ্বল আজ তার নিজ এলাকায় গণ সংযোগ করেন 
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির মনিটরিং সেল গঠন

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির মনিটরিং সেল গঠন



একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য ৫১ সদস্যের নির্বাচনী মনিটরিং সেল গঠন করেছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি।

আজ সকাল ১০টার দিকে নগরীর নাছিমন ভবনের  দলীয় কার্যালয়ে উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি এম এ হালিমের সভাপতিত্বে একটি প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক চাকসু ভিপি মো. নাজিম উদ্দিনকে আহ্বায়ক ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট  মো. আবু তাহেরকে সদস্যসচিব করে গঠিত মনিটরিং সেলের অন্য সদস্যরা হলেন- সাবেক সহ-সভাপতি এম এ হালিম, অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, ছালাউদ্দিন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নুরুল আমিন, নূর মুহাম্মদ, আজম খান, সেকান্দর চৌধুরী, অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, ডা. খুরশিদ জামিল, মো. সেলিম চেয়ারম্যান, আবু আহমদ হাসনাত, মোস্তফা কামাল পাশা, সৈয়দ নাছির উদ্দিন, কাজী মো. ছালাউদ্দিন, মো. ছালাউদ্দিন চেয়ারম্যান, মাহবুব ছাফা, মো. জাকির হোসেন, মো. তোফাজ্জ্বল হোসেন,  মো. ইউসুফ নিজামী, হাসান মো. জসিম উদ্দিন, মো. মোরছালিন, মো. সরওয়ার উদ্দিন সেলিম, মোবারক হোসেন কাঞ্চন, মো. জামসিদুর রহমান, মো. আব্দুর শুক্কুর মেম্বার, মো. জহুরুল আলম, এস এম ফারুক, রেজাউর নূর ছিদ্দিকী উজ্জ্বল, সৈয়দ মোস্তফা আলম মাসুম, অ্যাডভোকেট নাছিমা আক্তার, মো. মুরাদ চৌধুরী, এইচ এম নুরুল হুদা, মো. ফজলুল করিম চৌধুরী, মো. আলমগীর, গাজী মো. হানিফ, মো. আজিজ উল্লাহ, আনিস আক্তার টিটু প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে এম এ হালিম বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে এনে দেশের কল্যাণ, জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণে উত্তর জেলার আওতাধীন সাতটি সংসদীয় আসনে ২০-দলীয় জোট তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ধানের শীষ মার্কায় বিজয় সুনিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

সভায় আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি চাকসু ভিপি মো. নাজিম উদ্দিন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু তাহের, মো. সেলিম চেয়ারম্যান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আহমদ হাসনাত, বিএনপি নেতা জামসিদুল রহমান, অ্যাডভোকেট রেজাউর নূর ছিদ্দিকী উজ্জ্বল, সৈয়দ মোস্তফা আলম মাসুম, মো. নাছিরুল কবির মনির, গাজী মো. হানিফ, আনিস আকতার টিটু, মো. নুর নবী, মো. তারেক চৌধুরী প্রমুখ।


ড. কামালের গাড়িতে হামলা, অবিলম্বে তদন্ত দাবি

ড. কামালের গাড়িতে হামলা, অবিলম্বে তদন্ত দাবি


মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনসহ তার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিকের গাড়িসহ ৬/৭টি গাড়ির ভাংচুর হয়। আহত হয়েছে ঢাকা-১৪ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক সাজু, আ স ম আবদুর রবের গাড়ি চালকসহ ১০/১২ জন নেতা-কর্মী।
এদিকে এধরনের হামলাকে মেনে নেয়া যায়না মন্তব্য করে অবিলম্বে হামলার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন ড. কামাল হোসেন। রাজধানীর জামান টাওয়ারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কার্যালয়ে এই জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান। স্মৃতিসৌধে তিনি বলেছেন, যত শক্তিধর হোক তারা দেশে মালিক জনগণের কাছে তাদের নত হতে হবে, তাদের পরাজয় হবেই। সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির আবদুল আউয়াল মিন্টু, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মোহসিন মন্টু, রেজা কিবরিয়া, জগলুল হায়দার আফ্রিক, আ ও ম শফিকউল্লাহ প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী সম্মিলিত সাংস্কৃতিক ফ্রন্টের এক আলোচনায় অংশ নেন ড. কামাল হোসেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মিডিয়া সমন্বয়ক লতিফুল বারী হামিম জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবদন শেষে ড. কামাল হোসেন স্যার নেতৃবৃন্দকে নিয়ে গেইটের বাইরে নিজের গাড়িতে উঠার পরপরই এই হামলার ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগ-যুব লীগের একদল সন্ত্রাসী স্যারের গাড়ির দিকে লাঠি-সোটা নিয়ে এই হামলা চালায়। তারা স্যারের গাড়িতের লাঠি দিয়ে আঘাত করে। ঘটনার মুহুর্তেই ফ্রন্টের নেতা আ স ম আবদুর রবের গাড়িতেও তারা হামলা চালায়। এতে গাড়ি চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসী এলোপাথারি লাঠি দিয়ে নেতা-কর্মীদের ওপর এই হামলা করলে নেতা-কর্মীরা দিগি¦দিক দৌড়াদৌড়ি করতে থাকে। পরিস্থিতির এক পর্যায়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিয়ে সংগঠিত হতে থাকে।
হামিম জানান, সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি সৌধে যান। সেখানে একাত্তরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় আ স ম আবদুর রব, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, রেজা কিবরিয়া, বিএনপির আবদুস সালাম, গণফোরামের জগলুল হায়দার আফ্রিকসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতে ইসলামীর বিষয় নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে ড. কামাল হোসেন বলেন, এখানে আমরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসেছি। কত টাকা পেয়েছ এই প্রশ্নগুলো করার জন্য? এটা শহীদ মিনার। একাত্তর সালের শহীদরা এখানে। শহীদতের কথা চিন্তা করা উচিৎ। খামোশ! তিনি বলেন, আজকে আমরা এখানে এসেছি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে। লাখো শহীদ জীবন বির্সজন দিয়েছেন, সেই স্বাধীনতাকে আমরা যেন ধরে রাখি, সকলের জন্য অর্থ পূর্ণ করি। এই স্বাধীনতা ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে যারা আখের গোছাতে চাচ্ছে তাদের জন্য নয়, সব মানুষের এই স্বাধীনর অংশীদার ও প্রাপ্য। শোষণমুক্ত সুন্দর সমাজের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে যারা কাজ করছে, লোভ লালসা নিয়ে লুটপাট করছে, তাদের হাত থেকে এই দেশকে মুক্ত আমরা করবই।
হামলার ঘটনায় তদন্ত দাবি: এদিকে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে হামলার ঘটনা ‘কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না’ উল্লেখ করে অবিলম্বে তার তদন্ত চেয়েছেন ড. কামাল হোসেন। পুলিশ বাহিনীকে সংবিধানের বাইরে কোনো অন্যায় আদেশ না মানারও পরামর্শ দেন তিনি। বিকেলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা এই দাবি জানান। তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের দিনে সেখানে এই ধরনের ঘটনা আমাদের প্রতি কী হয়েছে সেটা আমরা চিন্তা করি না। শহীদদের প্রতি তারা অবমননা করেছে। এটা মেনে নেয়া যায় না, এটা সারাদেশের কোটি কোটি মানুষ মেনে নিতে পারে না। পুলিশের আইজির কাছে আমি লিখিত চিঠি পাঠাবো। আপনার সম্পর্কে আমার খুব ভালো ধারনা ছিলো যেন সেই ধারনা থাকে সেই কারণে আমি অনুরোধ করব, আপনি আমাদের কথাগুলোকে খুব গুরত্ব সহকারে দেখবেন যে জিনিসগুলো আপনাদেরকে তথ্য দেয়া হবে আপনি বিশ্বস্ত লোককে দিয়ে তদন্ত করাবেন। আমরা এই তদন্তকে পুরোভাবে সাহায্য করবো যাতে আমাদের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সম্মানে আমরা এই কাজটি করব।
আহতদের সাংবাদিকদের দেখিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, তাদের মেডিকেল সার্টিফিকেট আছে। রব সাহেবের আঙ্গুলটা দেখছেন। আইজি সাহেব আমি কথা দিচ্ছি- সব রকমের সাহায্য আমরা করবো। আইনানুগ সাহায্য, তদন্ত করার সাহায্য করবো আপনার পুলিশের মধ্যে যাদের বিশ্বস্ত মনে করে তাদেরকে ঢেকে একটু দায়িত্ব দিন, আমাদের সঙ্গে দিন।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, ওখানে শহীদরা আছেন সেখানে আমরা গেছি শ্রদ্ধা জানাতে। এটাতে যাদের গায়ে লাগে ওরা কারা? ভাড়াটিয়া। পয়সা নিয়ে এসব তারা করেছে। এটা কোনো নীতির কাজ হতে পারে না। এই কাজ কোনো সুস্থ দেশপ্রেমিক মানুষের কাজ হতে পারে না। এ ঘটনায় শহীদদের আত্ম অবশ্যই কষ্ট পাচ্ছে। আমাদের একটা জায়গা যেখানে মানুষ আসে শ্রদ্ধা জানাতে ১৪ ডিসেম্বর। এটা কী ভূলে গেছে তারা, না তারা জানেই না। যেসব ছোকড়ারা ওখানে এসব কাজ করেছে। আমি দেখেছি ছোকড়ারা এদিক-ওদিক দৌড়াদৌড়ি করছে, ইট পাটকেল মারছে, আহত করেছেন, গাড়ি ভাঙার চেষ্টা করেছে। এরা ছোকড়া, টোকাই। কারা এদের ভাড়া করেছে তাও জানতে চান তিনি।
নির্বাচনের প্রচারাভিযান শুরুর পর বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন বলেন, যেসব পুলিশ কার আদেশে যারা (প্রার্থীরা) আইনানুগভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে, কাজ করছেন তাদেরকে কেনো এসে তারা (পুলিশ) চ্যালেঞ্জ করে, বাঁধা দেয়, কেনো গ্রেফতার করে। আমি প্রত্যেকটা অ্যারেস্টের তথ্য চাই। দেশে এখনো সংবিধান আছে। যে সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর এক নম্বর। উনি লিখে দিয়ে গেছে এদেশের মানুষ আইনের আশ্রয় পাবে। পুলিশ আজকে যেটা করেছে এটা বঙ্গবন্ধুর কথাকে অমান্য করেছে। বঙ্গবন্ধু যেটাকে বলেছে হবে- তোমরা সেটাকে ডিফাই করেছো। তোমরা বঙ্গবন্ধুর কথাকে অমান্য করবে, এই বিজয়ের মাসে অমান্য করবে।
বেআইনি আদেশ পুলিশের মান্য করা উচিৎ নয় বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমি পুলিশ একাডেমিতে বহু লেকচার দিয়েছি বেআইনি আদেশ মানা একদম নিষেধ। বেআইনি আাদেশ মানবে না- এটা পুলিশরা জেনে রাখো। যারা বেআইনি আদেশ দিচ্ছে এরা চিরস্থায়ী কেউ নয়। ভুলে যেও না। তোমরা তো ৫০/৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করবে আশা করো। এটা মনে রেখে আজকে যে বা যাহারা আদেশ দেয় তোমাদের এটা সাংবিধানিক কর্তব্য সেই আদেশ আইনানুগ কিনা? যদি কোনো লোক আইন ভঙ্গ করছে না তাকে অ্যারেস্ট করা এটা সংবিধান ভঙ্গ করা। তোমাদের শুভাকাঙ্খি হিসেবে বলছি- তোমরা সংবিধান ভঙ্গ করার অপরাধ করিও না। যারা বেআইনি আদেশ দিচ্ছে তাদের দেশের মানুষ চিহ্নিত করে আগামীতে বিচারও হবে।
ড. কামাল হোসেন দৃঢ় কন্ঠে বলেন, সরকার ক্ষমতায় ১৫/১৬ দিন আছে। তাদেরকে বলব- বেআইনি আদেশ দেয়া বন্ধ করুন, আপনারা আইন মেনে চলুন। সরকার আইনের উর্ধেব না। জেনে রাখো এই দেশে কোনো সরকার আইনের উধের্ব না। এটা হলো স্বাধীনতার অর্থ। এতো লক্ষ শহীদ হয়েছেন, বুদ্ধিজীবীরা শহীদ হয়েছেন। তারা শহীদ হয়েছিলো যাতে আমরা মাথা উঁচু করে অধিকার নিয়ে বাঁচবো। এই স্বাধীন দেশে ৪৭ বছর পরে দেখতে হচ্ছে- লজ্জা পাওয়া উচিৎ যারা দেশ শাসন করছেন। লজ্জ্বা পাও লজ্জ্বা পাও, লজ্জ্বা পাও। লজ্জ্বা পেয়ে মুখটা দেখাও না মুখটা একটু ঢেকে এদিক ওদিকে থেকে ১০/১৫ দিন কাটিয়ে দাও। তোমাদের মুখ দেখব না যারা এসব অন্যায় কাজ করছে। অবিলম্বে তা বন্ধ করো। ১০/১৬ দিন আছো চেষ্টা করো ভলো থাকতে। তারপরে কিন্তু।
গণমাধ্যমকে দেশের স্বার্থে জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছিয়ে দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমার বিশ্বাস দেশের মানুয়ের প্রতি একশত ভাগ আস্থা আছে তারা সঠিক বিচার করবে, তারা সংবিধানকে সমুন্নত রাখবে, তারা আইনের শাসনকে দেশে ফিরিয়ে আনবে। আর যারা এসব অন্যায়-অনিয়ম-অসাংবিধানিক কাজ করছে তাদের থেকে আমাদেরকে মুক্ত করবে।
আ স ম আবদুর রব বলেন, ওরা ভেবেছে ভয় দেখিয়ে আমাদেরকে নির্বাচনের বাইরে রাখবে। সেজন্য আজকে এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। কতগুলো ছেলেকে আহত করেছে। এই হামলা পরিকল্পিত। আমরা নির্বাচন করতে চাই। সিলেটে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। আমাদের প্রার্থীরা প্রচারণায় নামতে পারছে না। আমাদের কর্মীদের এখনো নির্দেশ দিচ্ছি না, সকলকে শান্ত থাকতে হবে সাহসের সাথে মোকাবিলা করতে হবে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর জনগণকে সাথে নিয়ে ব্যালট বিপ্লব করতে চাই, ব্যালটে যুদ্ধ করতে চাই, স্বৈরশাসনকে বিদায় করতে চাই।
প্রটোকল ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ফ্ল্যাগ লাগিয়ে গোপালগঞ্জ গিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করবেন আর আমাদেরকে প্রচারণা করতে দেয়া হবে। এসব কিছ ফাইজলামি, একটা কী মগের মল্লুক। প্রধানমন্ত্রী যদি ফ্ল্যাগ ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে ড. কামাল হোসেনকে প্রটোকল দিতে হবে। দেশবাসীর প্রতি আমাদের আহবান ধানের শীষকে জয়লাভ করে খালেদা জিয়ার মুক্তি তরান্বিত করুন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজকে বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে যাবো সেখানে আক্রমন করা হবে এটা অবিশ্বাস্য। এই অবিশ্বাস্য কাজগুলো সরকার ও তার দলের লোকেরা কেনো করছে এটা সকলের বোধগম্য। কারণ তারা হারতে চায় না। এতো খুন-গুম, এতো দুর্নীতি-লুটপাট করেছে যে তারা ক্ষমতা ছাড়তে ভয় পায়। অথচ আমরা আশ্বস্ত করেছিলাম যে, আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করবো না। নির্বাচন কমিশন একটা ঠুঁটো জগন্নাথের মতো হয়ে আছে।
কিছুই করেন না সিইসি। তিনি মিন মিন করে বলেন আমরা বিব্রত। আরে আপনারা স্বাধীন নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। আপনাদের বিব্রত হওয়ার কথা নয়, ক্ষুব্ধ হওয়ার কথা, ব্যবস্থা নেয়ার কথা। আপনারা কী মসজিদের ইমাম নাকী। আমি ইসিকে বলব, আজকের ঘটনাসহ গত কয়েকদিনের ঘটনার বিচার ব্যবস্থা নিন। না নিতে পারলে ব্যর্থতার দায়িত্ব মাথায় নিয়ে তাদের পদত্যাগ করা উচিৎ। এটাই তাদের জন্য সন্মানজনক হবে। মনে রাখতে হবে তারা প্রজাতন্ত্রের মানুষ সরকারের না।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এটা খুবই সংগত দাবি প্রধানমন্ত্রী তার নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে যাবেন সমস্ত প্রটোকল নিয়ে, এটা তিনি যেতে পারেন না। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আমরা বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল প্রত্যাহার করা হোক, মন্ত্রীদের সব প্রটোকল বন্ধ করা হোক, গ্রেফতার করা হোক। যদি মনে করেন, এরকম করে নির্বাচন পার হয়ে যেতে পারবেন- পারবেন না। আমরা নির্বাচন পর্যন্ত আছি ২৯ তারিখ পর্যন্ত মাটি কামড়ে পড়ে আছি।
কিন্তু ৩০ তারিখে এই কামড় অন্যদিকে চলে যাবে। ৩০ তারিখে ব্যালেট বিপ্লব করবে। সারাদেশে বিভিন্ন প্রার্থীদের ওপর হামলার পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে মান্না বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে অনেক অভিযোগ করেছেন কোনো রকম প্রতিকার করেনি।
শুক্রবার সিইসি এমন মন্তব্য করেছে যা কমিশন সরাসরি আমাদের বিরুদ্ধে ও সরকারের পকেটে চলে যাওয়ার মতো আচরণ করছেন।
ধানের শীষময় বগুড়া-৪ আসন, কোনঠাসা নৌকার প্রার্থী

ধানের শীষময় বগুড়া-৪ আসন, কোনঠাসা নৌকার প্রার্থী


বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম) নির্বাচনী এলাকা ধানের শীষময় হয়ে উঠেছে। কারণ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত বিএনপির প্রার্থী বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব মোশাররফ হোসেনের পক্ষে পুরো এলাকায় ধানের শীষের রব উঠেছে। পুরো নির্বাচনী এলাকা চড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।
বিএনপি ও জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে নৌকার প্রার্থী জাসদ (ইনু) নেতা একেএম রেজাউল করিম তানসেন জোটের শরিক আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এমনকি নিজ দলের অভ্যন্তরীন কোন্দলের কারণে এখন কোনঠাসা। তাই তিনি নিজ দলের কিছু সংখ্যক কর্মী নিয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলায় ভোট চাচ্ছেন। এখনও কাহালু উপজেলায় ঢুকতেই পারেননি।
নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে ধানের শীষের পক্ষে বৃহস্পতিবার কাহালু উপজেলার দূর্গাপুর ও জামগ্রাম ইউনিয়নে পথসভা, গণসংযোগ ও জনসভায় অংশ নেন মোশাররফ হোসেন। তিনি দলের নেতাকর্মীদের বিশাল বহর নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে দূর্গাপুর বাজার থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। এরপর তিনি ওই ইউনিয়নের দেওগ্রাম, চারমাথা, নওদাপাড়া, চাঁনপুরা, পাঁচপীর, সিংড়ায় প্রচারনা শেষে বিকেলে জামগ্রাম বাজারে নির্বাচনী সভায় অংশ নেন।
জনসভায় তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধার , খালেদা জিয়াকে মুক্ত এবং তারেকে রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ধানের শীষ বিপুল ভোটে বিজয়ী করতে হবে।
ইউনিয়ন আহবায়ক খায়রুল ইসলামের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন কাহালু উপজেলা আহবায়ক কাজী আবুল বাশার, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম, বিএনপি নেতা আনিসুর রহমান, হাফিজুর রহমান, এমএ হান্নান, আব্দুর রশিদ, খায়রুল আলম, শফিকুল ইসলাম, বেলায়েত হোসেন আদর প্রমুখ।
সারিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপি অফিস আগুনে ভস্মিভূত

সারিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপি অফিস আগুনে ভস্মিভূত


বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপি অফিস আগুনে ভস্মিভূত করেছে দূর্বৃত্তরা। এতে অফিসের আসবাবপত্রসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে দূর্বৃত্তরা উপজেলা সদরে অবস্থিত উপজেলা বিএনপি অফিসে আগুন লাগিয়ে দেয়। এরপর মুহূর্তের মধ্যে কার্যালয়টি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অফিসে চেয়ার, টেবিলসহ অন্যান্য আরো অনেক আসবাবপত্র ছিল বলে জানা গেছে। এ ছাড়া আগুনে অফিসের পাশের দুটি দোকানও পুড়ে গেছে।
ঘটনার পর শুক্রবার সকালে পুলিশ, র‌্যাব ও বিএনপি নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সারিয়াকান্দি থানার ওসি আল আমিন বলেন, এ ঘটনা কারা ঘটিয়েছে তা জানা যায়নি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপি সভাপতি সুজাউদদৌলা সন্জু বলেন, রাতের বেলা অফিস পোড়ানোর খবর শুনেছি।
নির্বাচনের আগেই কর্মী-সমর্থকদের এলাকা ছাড়ার হুমকি ওসি প্রদীপের

নির্বাচনের আগেই কর্মী-সমর্থকদের এলাকা ছাড়ার হুমকি ওসি প্রদীপের


কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে বিএনপি মনোনীত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনী কাজে মারাত্মক বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন ধানের শীষের নেতাকর্মীরা। তিনি অভিযোগ করেন, টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ধানের শীষের কর্মীদের নির্বাচনের আগে এক মাস এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। না হলে নেতাকর্মীদের বেছে বেছে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলার কথা বলে বেড়াচ্ছে।
শুক্রবার দুপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শাহজাহান চৌধুরী এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে গিয়ে তল্লাশি ও হয়রানী করছে পুলিশ। নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। প্রচারণার কাজ থেকে ধানের শীষের সমর্থকদের আটক করে নিয়ে যাচ্ছে। তফশিলের পর থেকে এ পর্যন্ত ৬০ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শাহজাহান চৌধুরী দুঃখ করে বলেন, এত কিছু করার কি দরকার? আমাদের নির্বাচন না করতে বললে তো হয়ে যেতো। অনর্থক নিরীহ মানুষদের হয়রানী করা হচ্ছে কেন? ওসি প্রদীপ কুমার দাশ অতি উৎসাহী হয়ে এসব করছে। তাকে প্রত্যাহার করলে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ, ওসি প্রদীপ প্রশাসনের পোশাক পরে সরকারি দলের ভূমিকা পালন করছে। নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে গিয়ে প্রতিদিন হুমকি দিচ্ছে। তার কারণে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি ওসি প্রদীপের কারণে টেকনাফের দিকে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে যাওয়াও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী, প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক আকতার চৌধুরী, অ্যাডভোটেক আবদুল মন্নান, এম মোকতার আহমদ, ছৈয়দ আহমদ উজ্জল, রাশেদুল করিম মার্কিন, মোকতার আহমদ প্রমুখ।
ড. কামালের ক্ষোভকে সমর্থন করেন ৮১ শতাংশ মানুষ!

ড. কামালের ক্ষোভকে সমর্থন করেন ৮১ শতাংশ মানুষ!


সংবাদকর্মীদের ওপর ড. কামালের ক্ষোভ প্রকাশকে সমর্থন করেছেন ৮১ শতাংশ মানুষ। আর সমর্থন করেননি মাত্র ১৯ শতাংশ মানুষ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ফেসবুক পেইজে জরিপের ফলাফলে এই চিত্র ফুটে উঠে।
গতকাল সকালে সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জামায়াত প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ড. কামাল হোসেন।

অনললাইন পাঠকদের কাছে ইনডিপেনডেন্ট টিভির প্রশ্ন ছিল- “সংবাদকর্মীদের ওপর ড. কামালের ক্ষোভ সমর্থন করেন কি? আপনার মতামত জানান। জরিপে অংশ নিন আজ ১৪ ডিসেম্বর, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ফেসবুক পেইজে। জরিপের ফলাফল সন্ধ্যা ৭টার সংবাদে প্রার করা হবে।”
রাত সোয়া আটটায় ফেসবুক পেইজ ‘ইনডিপেনডেন্ট২৪,টিভি’ (independent24.tv) এ প্রদর্শিত ফলাফলে দেখা যায়, জরিপে হ্যা এর পক্ষে ভোট ৮১% এবং না এর পক্ষে ১৯%। আর ভোটারের সংখ্যা প্রদর্শিত হচ্ছিল ৩২ হাজার ১শ’ জন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ড. কামাল প্রথমে বলেন, স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে যারা কাজ করছেন, লোভ-লালসা নিয়ে লুটপাট করছেন তাদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করবো। লাখো শহীদ জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, সেই স্বাধীনতাকে আমরা ধরে রাখি, সবার জন্য অর্থপূর্ণ করি। ঐক্যফ্রন্ট শোষণমুক্ত সুন্দর সমাজের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এর জন্য শর্ত হচ্ছে জনগণের ঐক্য।
তার কথার শেষে জামায়াতের বিষয়ে তার অবস্থান প্রসঙ্গে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করলে ড. কামাল প্রথমে এডিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে আবারও প্রশ্ন করা হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে প্রশ্নকারি সাংবাদিককে ‘চুপ করো, খামোশ’ বলেন।
তারেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসিতে আওয়ামী লীগ

তারেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসিতে আওয়ামী লীগ



বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডে তারেক রহমানের অংশগ্রহণের বিষয়ে ইসিতে লিখিত অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ। রোববার বি‌কেল আওয়ামী লী‌গের এক‌টি প্র‌তি‌নি‌ধি দল ইসিকে এই অভিযোগ করেন।
রোববার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খানের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ অভিযোগ সংবলিত লিখিত আবেদনটি হস্তান্তর করে।
অভিযোগে তারা বলেন, তারেক রহমানের টেলিকনফারেন্সে দেয়া বক্তব্য এবং সাক্ষাৎকার গ্রহণ নির্বাচনী আইন এবং সর্বোচ্চ আদালতের সুষ্পষ্ট নির্দেশনার লঙ্ঘন। একই সঙ্গে তারেক রহমানের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার না করতে অনুরোধ জানান তারা।
ক্ষমতাসীন দলের এই প্রতিনিধি সন্ধ্যায় ইসিতে এসে তাদের অভিযোগ দাখিল করার আগে বিকালে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল তালুকদার এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তারেকের বক্তব্য প্রদানের বিষয়টি কেউ প্রমাণসহ অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব। যদি কেউ তথ্য প্রমাণসহ আমাদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন, তাহলে আমরা আইনের মধ্যে থেকে যদি কিছু থাকে, তাহলে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বলব। আর যদি আইনের ভেতর কিছু না থাকে, তাহলে আমরা নিজেরা (কমিশন) বসে কী করতে পারি সেটা পর্যালোচনা করে দেখে তার পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এর আগে ঐক্যফ্র‌ন্টের বিরু‌দ্ধে নির্বাচনী আচারণবি‌ধি ভ‌ঙ্গের অভিযোগ করতে নির্বাচন ক‌মিশ‌নে গেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এদিন সন্ধ্যা ৬টায় আওয়ামী লী‌গের এক‌টি প্র‌তি‌নি‌ধি দল সেখা‌নে গেছেন ব‌লে নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন আ‌ওয়ামী লী‌গের সাংগঠ‌নিক সম্পাদক ম‌হিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
তি‌নি জানান, আমরা ক‌য়েকজন ঐক্যফ্র‌ন্টের আচারণ বি‌ধি লঙ্ঘ‌নের অভিযোগ জানা‌তে সেখা‌নে যা‌চ্ছি।
এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎকার শুরু হয়। আর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ভিডিও সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন।
আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক একজন আসামি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে কিনা সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি জাতির কাছে বলতে এখন পারি, একজন দণ্ডিত পলাতক আসামি এ ধরনের বক্তব্য দিতে পারে কিনা? জাতির কাছে আমি এর বিচার চাইছি। নির্বাচন কমিশনের কাছেও দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। দুটি মামলায় দণ্ডিত পলাতক এরকম কেউ এভাবে ভিডিও কনফারেন্স করে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে কিনা- আমি সেটি নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাইছি।
উল্লেখ্য, বিএনপির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা তারেক রহমান লন্ডন থেকে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে রোববার দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেন।
বিএনপি প্রাথীের্দর যোগ্যতা শেষ পযর্ন্ত টিকে থাকা!

বিএনপি প্রাথীের্দর যোগ্যতা শেষ পযর্ন্ত টিকে থাকা!

রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কাযার্লয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেন লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। উপস্থিত ছিলেন মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ মনোনয়ন বোডের্র সদস্যরা

মনোনয়নপ্রত্যাশী এক নেতা বলেন, বোডর্ সদস্যরা বলছেন, ‘এবার একটা ভিন্ন পরিস্থিতিতে ভোট হচ্ছে। এখানে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে টিকে থাকতে হবে। ভোটের মাঠ ছেড়ে দেয়া যাবে না
একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার রোববার সকালে শুরু হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেন লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সকাল নয়টার দিকে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কাযার্লয়ে দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শুরু হয়। রোববার রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। পঞ্চগড়-১ আসনের প্রাথীের্দর সাক্ষাৎকারের মধ্য দিয়ে এই কাযর্ক্রম শুরু হয়। প্রথম সাক্ষাৎকার দেন ওই আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ইউনুস আলী নামের এক নেতা।

সাক্ষাৎকারের শুরুতেই বিএনপির মনোনয়ন বোডের্র সদস্যরা মনোনয়নপ্রত্যাশীদের জানিয়েছেন, কোন নেতার কী অবদান, বিগত ১২ বছর কে কী করছেন, সে খবর দলের কাছে আছে। এরপরই প্রাথীর্র কাছে প্রশ্ন করা হচ্ছে, এই ১২ বছর প্রাথীর্ সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি দলের দ্বারা কী ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন? তৃণমূলের নেতাকমীের্দর পাশে কীভাবে ছিলেন? এবং নিজে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন?

এরপর সাক্ষাৎকারের জানতে চাওয়া হচ্ছে, এলাকায় প্রাথীর্র অবস্থান কতটা শক্তিশালী। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে ভোটের লড়াইয়ে থাকতে পারবে কিনা?

যেসব প্রাথীর্র কমর্কাÐ, নিজ নিজ আসনে অবস্থা ভালো এবং মনোনয়ন পাওয়ার সব যোগ্যতা আছে, তখন ওই প্রাথীর্র কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে, ভোটের মাঠে শেষ পযর্ন্ত টিকে থাকতে পারবেন তো?

বিএনপির মনোনয়ন বোডের্র সাক্ষাৎকার দিয়েছেন- এমন কয়েকজন মনোনয়নপ্রত্যাশীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। মনোনয়নপ্রত্যাশী ওই নেতারা বলছেন, মূলত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই কথাটি জানতে চান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কথা বলেও এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই নেতা বলেন, এবার ভিন্ন পরিস্থিতিতে বিএনপি নিবার্চন করছে। এ কারণে এটি নিশ্চিত হওয়া দরকার, ওই প্রাথীর্ আগেই মাঠ ছেড়ে দেবেন, নাকি শেষ পযর্ন্ত বিরূপ পরিস্থিতে সরে দঁাড়াবেন, সেটা জানতে চাওয়া হচ্ছে। এবার প্রাথীের্দর যোগ্যতার ক্ষেত্রে এটিও বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মনোনয়নপ্রত্যাশী বলেন, মনোনয়ন বোডের্র সদস্যরা বলছেন, সম্প্রতি একসঙ্গে বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নিবার্চন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নিবার্চনের উদাহরণ টানা হয়েছে। তারেক রহমান ও বোডের্র সদস্যরা তার কাছে জানতে চেয়েছেন, ভোটের মাঠে শেষ পযর্ন্ত তিনি টিকে থাকতে পারবেন কিনা। যুক্তি হিসেবে নেতারা বলছেন, তিন সিটি করপোরেশন নিবার্চনের মধ্যে সিলেটে বিএনপির মেয়রপ্রাথীর্ আরিফুল হক ও রাজশাহীর মেয়রপ্রাথীর্ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ভোটের মাঠে শেষ পযর্ন্ত ছিলেন। এর মধ্যে আরিফুল হক জয় পেয়েছেন। আর বুলবুল একাই লড়াই করছেন। নেতারা বলছেন, বুলবুলের সঙ্গে স্থানীয় নেতারা মাঠে নামলে সেখানেও বিএনপি বিজয় পেতে পারত।

বিএনপির নেতারা বরিশালে দলটির মেয়রপ্রাথীর্ মুজিবর রহমান সরোয়ারের সরে দঁাড়ানোর দিকেও ইঙ্গিত করেছেন।

মনোনয়নপ্রত্যাশী ওই নেতা বলেন, বোডর্ সদস্যরা বলছেন, ‘এবার একটা ভিন্ন পরিস্থিতিতে ভোট হচ্ছে। এখানে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে টিকে থাকতে হবে। ভোটের মাঠে ছেড়ে দেয়া যাবে না। তাই আমার কাছে মনে হয়েছে, যারা নিজ নিজ এলাকায় বিরূপ পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে ভোটের মাঠে থাকতে পারবেন, ভোটারদের সঙ্গে থাকতে পারবেন, তঁাদেরই মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’ তিনি আরও বলে, প্রাথীের্দর নাভর্ কতটা শক্ত, প্রাথীর্র জন্য স্থানীয় নেতা-কমীর্রা কতটা ত্যাগ শিকার করতে পারবেন, সেটা দেখা হচ্ছে।

মনোয়ন বোডের্ ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বোডের্র আরেক সদস্য স্থায়ী কমিটির নেতা মিজার্ আব্বাস অনুপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি চেয়ারপরসন খালেদা জিয়া দুই দুনীির্ত মামলার সাজায় গত ফেব্রæয়ারি থেকে কারাবন্দি। তার অবতর্মানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন তারেক রহমান। দুনীির্তর দুই মামলায় ১৭ বছর এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন সাজার রায় মাথায় নিয়ে গত এক দশক ধরে তিনি আছেন লন্ডনে। 

বিএনপির দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রংপুর বিভাগে পঞ্চগড়, ঠাকুরগঁাও, দিনাজপুর, নিলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা জেলার ৩৩টি সংসদীয় আসনের জন্য আড়াইশ প্রাথীর্ দলীয় মনোনয়ন পেতে সাক্ষাৎকার দেন।

মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ছাড়াও দলের সংশ্লিষ্ট জেলা ও মহানগর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন সাক্ষাৎকারে।

সকাল ৯টায় দলের পালাের্মন্টারি বোডের্ প্রথম ডাক পড়ে পঞ্চগড়-১ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের। এ আসনের দলের মনোনয়ন চেয়েছেন তিন জন। এরা হলেন ইউনুস শেখ, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির ও তৌহিদুল ইসলাম।

২০০১ সালের নিবার্চনে এই আসনে প্রাথীর্ হয়ে সংসদ সদস্য নিবাির্চত হয়েছিলেন ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, পরে তিনি ওই সংসদে স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি এবার আছেন পালাের্মন্টারি বোডের্। আর তার ছেলে ব্যারিস্টার নওশাদ জমির ওই আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে সাক্ষাৎকার দেন।

রংপুর বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শেষে এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে বেলা আড়াইটা থেকে শুরু হয় রাজশাহী বিভাগে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার।

এই বিভাগে জয়পুরহাট, বগুড়া, চঁাপাইনবাগঞ্জ, নওগঁাও, রাজশাহী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার ৩৯টি সংসদীয় আসনের মনোনয়নের জন্য তিন শতাধিক আবেদন জমা পড়ে বিএনপির দপ্তরে।

নিধাির্রত সূচি অনুযায়ী, আজ বরিশাল ও খুলনা বিভাগ; মঙ্গলবর চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট; বুধবার ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও ঢাকা বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার হবে।

এই সাক্ষাৎকারের কারণে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কাযার্লয়ের সামনের সড়কের মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ফরম জমার রশিদ নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। তাদের কমীর্-সমথর্ক নিয়ে আসতে নিষেধ করা হলেও অনেকেই ১০/১২ জনকে সঙ্গী করে যান।

খালেদা জিয়াকে নিয়ে বই প্রকাশ

খালেদা জিয়াকে নিয়ে বই প্রকাশ



বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন ও নানা ঘটনা প্রবাহ নিয়ে লেখা ‘বেগম খালেদা জিয়া: হার লাইফ, হার স্টোরি’ শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র মুক্তির কয়েক দিনের মধ্যেই কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে নিয়ে বইটি প্রকাশিত হলো।
মাহফুজ উল্লাহর লেখা বইটি প্রকাশ করেছে দি ইউনিভার্সেল একাডেমি। ৭১৮ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থের দাম ২০০০ টাকা।
রোববার বিকেলে ঢাকার গুলশানের হোটেল লেকশোরে এক অনুষ্ঠানে ‘বেগম খালেদা জিয়া: হার লাইফ, হার স্টোরি’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব হয়।
গত শতকের আশির দশকের প্রথম দিকে স্বামী রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর একেবারে গৃহিণী থেকে রাজনীতিতে আসেন খালেদা জিয়া। বলা হয়, ক্যান্টনমেন্টে গড়া দল বিএনপির জনভিত্তি তৈরি হয় খালেদা জিয়ার হাতেই। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন তিনি।
এরপর বহু চড়াই-উত্রাই পেরিয়ে বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়ে চলছেন খালেদা জিয়া। দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি তিনি। এর মধ্যে আরেকটি মামলায়ও তার বিরুদ্ধে রায় হয়েছে।
গ্রন্থের লেখক মাহফুজ উল্লাহ বলেন, খালেদা জিয়া জনমানুষের রাজনীতিবিদ বলেই এই বইয়ের নামকরণ করা হয়েছে হার লাইফ, হার স্টোরি। খালেদা জিয়া যে বয়সে বিধবা হয়েছেন, এর পর বাকি জীবন আজ পর্যন্ত দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নিবেদন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের মানুষের কাছে বাতিঘর হিসেবে দাঁড়িয়ে আছেন। বেগম জিয়া হচ্ছেন বাংলাদেশের রাজনীতির একজন বংশীবাদক। বইটি পড়লে পাঠকরা বুঝবেন এই বইটি হচ্ছে মোহিনী নেতৃত্ব এবং গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের একমন্যতা।
গ্রন্থটির ওপর আলোচনা করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম আনোয়ার হাশিম, নিউ এইজ সম্পাদক নুরুল কবীর, কলামিস্ট ইফতেদার আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লায়লা এন ইসলাম, অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, ইসমাইল জবিউল্লাহ, সৈয়দ কামালউদ্দিন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, তাবিথ আউয়াল, শামা ওবায়েদ, জেবা খান প্রমুখ।
মানবকণ্ঠ/এসএস
মানুষের কল্যাণের জন্য ভোটে নির্বাচিত হতে চান বেবী নাজনীন

মানুষের কল্যাণের জন্য ভোটে নির্বাচিত হতে চান বেবী নাজনীন



মানুষের কল্যাণে নিজেকে আরো বেশি করে নিয়োজিত করতে ভোটে জয় চান জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী বেবী নাজনীন। তিনি নীলফামারী -৪ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাম্ভাব্য প্রার্থী। রোববার তিনি গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে মনোনয়ন পেতে সাক্ষাতকার দিয়েছেন। 
ওখান থেকে বের হয়ে, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ সম্পাদক বলেন, ‘আমি দলের মনোনয়ন পেতে শতভাগ আশাবাদী।’ বেবী নাজনীন বলেন, ‘দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি এলাকার মানুষের কল্যাণে কাজ করবো। আমি সংগীতে কাজ করছি, এখন রাজনীতির মাধ্যমে আমার এলাকা আর সংগীত জগতের মানুষ, সবার জন্য কাজ করবো।’
তিনি বলেন, জনকল্যাণমূলক কাজে অনেক আগে থেকেই সম্পৃক্ত আমি। ভোট পেয়ে জনপ্রতিনিধি হতে পারলে কল্যাণমূলক কাজে নিজেকে আরো বেশি উজার করে দিতে পারব। 
এ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেতে আরও সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মো. আমজাদ হোসেন সরকার, কৃষিবিদ পারভীন আক্তার ও বিলকিস আক্তার।
এছাড়া গাইবান্ধা-১ আসনে মো. মাজহারুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম জিন্নাহ, ডা. জিয়াউল হক, গাইবান্ধা-২ আসনে খন্দকার আব্দুল আহাদ, আনিসুজ্জামান খান, মাহমুদুন নবী টিটুল, গাইবান্ধা-৩ আসনে ড. মঈনুল হাসান সাদী, ড. মিজানুর রহনান মাসুম, গাইবান্ধা- ৪ আসনে অধ্যাপক আনিসুল হক, ফারুক কবির আহম্মেদ, ফারুক আহম্মেদ, শামীম কাওসার লিঙ্কন সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
গাইবান্ধা-৫ আসনে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সেলিম আহম্মেদ তুলি, মোহাম্মদ আলী, হাসান সরকার, মইনুল ইসলাম শামীম, নাজমুল ইসলাম নয়ন, তোফায়েল আহম্মেদ, ফারুক আলম সরকার।
লালমনিরহাট-১ আসনে রাজীব প্রধান, মাওলানা সাজু পাটোয়ারী, লালমনীরহাট-২ আসনে সালেহ উদ্দীন আহম্মেদ হেলাল, ড. রোকনুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ার কামাল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, লালমনিরহাট-৩ অাসনে আসাদুল হাবীব দুলু, কুড়িগ্রাম-১ আসনে সাইফুর রহমান রানা, কুড়িগ্রাম-২ এ সোহেল হোসেন কায়কোবাদ,আবু বক্কর সিদ্দিক
কুড়িগ্রাম-৩ আসনে তাসবিরুল ইসলাম,আব্দুল খালেক, কুড়িগ্রাম-৪ আসনে অধ্যাপক মোখলেসুর রহমান, আজিজুর রহমান, ইমান আলী সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ।
দিনাজপুর-৩ আসনে অ্যাডভোকেট মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, শাহরিয়ার কবির ডন, হাফিজুর রহমান, দিনাজপুর-৬ আসনে শাহাবুদ্দীন সুজন প্রমুখ রোববার সাক্ষাৎকার দেন।

আইনে থাকলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : ইসি

আইনে থাকলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : ইসি



বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করছেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেছেন, আইনে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ইসি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা বলেছেন, আমরা শুনেছি। আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো কিছু মনিটরিংয়ে নিজস্ব ক্যাপাসিটি নাই।
যদি কেউ তথ্য-প্রমাণসহ আমাদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন তাহলে আমরা আইনের মধ্যে যদি কিছু থাকে, তাহলে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বলব।
রোববার রাজধানীর নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আর যদি আইনের ভেতর কিছু না থাকে তাহলে আমরা নিজেরা বসে কী করতে পারি, সেটা পর্যালোচনা করে দেখে তারপর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। 
(উল্লেখ তারেক রহমান আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত
সাক্ষাৎকার কারা নেবেন সেটা বিএনপির নিজস্ব ব্যাপার: ফখরুল

সাক্ষাৎকার কারা নেবেন সেটা বিএনপির নিজস্ব ব্যাপার: ফখরুল




মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে কারা সাক্ষাৎকার নেবেন সেটা দলের নিজেদের ব্যাপার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এটা নিয়ে কথা বলার এখতিয়ার কারও নেই। আমার দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার কিভাবে নেব এটা আমার সিদ্ধান্ত। ভিডিও কনফারেন্সে না কী সরাসরি সাক্ষাৎকার নেয়া হবে সেটা নিজেদের ব্যাপার।
রোববার বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান রাজনৈতিক কার‌্যালয়ে সাংবাদিক তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও খালেদা জিয়ার মুক্তির অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে গেছি। সেই জন্য আনুষ্ঠানিকতার কাজগুলো করছি। আজকে আমাদের দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষৎকার গ্রহণ শুরু হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা মনে করছি না, অবাধ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যে নির্বাচনের জন্য আমরা দীর্ঘকাল আন্দোলন সংগ্রাম করছি। সরকার এক তরফা, একদলীয় নির্বাচন করার পায়তারা করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০ দল, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ একটি ফলপ্রসূ ও অর্থবহ নির্বাচনের দাবি সব সময় তুলে ধরছে। আমরা নিজেরাও সংলাপে গিয়েছি।
এর আগে সকাল থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগ্রহীদের সাক্ষাৎকার নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। লন্ডন থেকে স্কাইপির মাধ্যমে মনোনয়ন বোর্ডে যুক্ত হন তিনি।
বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত রয়েছেন।
নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ২৮ নভেম্বর, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ২ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ৯ ডিসেম্বর এবং প্রতীক বরাদ্দের দিন ১০ ডিসেম্বর।
মানবকণ্ঠ/এসএস

তিন প্রশ্ন শেষে সবাইকে গণসংযোগের নির্দেশ

তিন প্রশ্ন শেষে সবাইকে গণসংযোগের নির্দেশ


একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শুরু হয়েছে। রোববার প্রথম দিনে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের সংসদীয় আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার নিয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে গঠিত দলের মনোনয়ন বোর্ড। মনোনয়ন বোর্ডে লন্ডন থেকে স্কাইপিতে সংযুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রোববার সকাল ৯ টা ৪০ মিনিটে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎকার শুরু হয়। মধ্যাহ্ন বিরতি দিয়ে সাক্ষাতকার চলে রাত অবধি। প্রথম ধাপে রংপুর বিভাগের ৩৩ টি আসনে ১৫৮ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে রাজশাহী বিভাগের ৩৯টি আসনে ৩৬৮ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর সাক্ষাতকার নেয়া হয়।
জানা গেছে, আসনভিত্তিক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডেকে একসাথে সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে। মনোনয়ন বোর্ডের তিনটি প্রশ্ন ছিল কমন। এগুলো হচ্ছে- কেন দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। আন্দোলন সংগ্রামে তার অবদান কী এবং মনোনয়ন দিলে জয়লাভ করার সম্ভাবনা কতটুকু। তারেক রহমান নিজেও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন।


চ্যারিটেবল ট্রাস্ট্র দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার আপিল

চ্যারিটেবল ট্রাস্ট্র দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার আপিল



জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট্র দুর্নীতি মামলার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
রোববার হাইকোর্টের সংশ্নিষ্ঠ শাখায় আপিল আবেদন দাখিল করা হয়েছে। হাইকোর্টের কোনো একটি বেঞ্চে শিগগিরই আপিলটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।
খালেদার আইনজীবী প্যানেলের সদস্য বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সমকালকে বলেন, ৬৩৮ পৃষ্ঠার মূল রায়সহ প্রায় ৭০০ পৃষ্ঠার এই আপিলে সাজা বাতিল ও জামিনের আবেদন করা হয়েছে। আপিলে ২০টি যুক্তি দেখিয়ে খালাস চাওয়া হয়।
গত ২৯ অক্টোবর সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট্র দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন।
মামলার অপর তিন আসামি তিন আসামি আবদুল হারিছ চৌধুরী (পলাতক), জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলামকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পাশাপাশি তাদের ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট্রের নামে কেনা কাকরাইলের ৪২ কাঠা জমি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
রায়ের পনের দিন পর ১৪ নভেম্বর চ্যারিটেবল ট্রাস্ট্র দুর্নীতি মামলার ৬৩৮ পৃষ্টার পুর্ণাঙ্গ রায়ের সত্যয়িত কপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
আপিলে খালেদা জিয়ার আপিল গ্রহণের জন্য এবং তার জরিমানা স্থগিত ও দণ্ড বাতিল চাওয়া হয়েছে।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট্রের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগষ্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারি পরিচালক হারন-অর রশীদ।
এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি একই আদালত বিদেশ থেকে এতিমদের জন্য আসা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে খালেদা জিয়াকে ৫ বছর সাজা দেন। ওই সাজার পর থেকে ৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন।
তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্স বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিষয়

তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্স বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিষয়



প্রার্থী বাছাইয়ের সাক্ষাৎকারে তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার বিকাল ৫টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এর আগে সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দণ্ডিত হওয়া সত্ত্বেও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলার বিষয়ে আমি জাতির কাছে বলতে এখন পারি, একজন দণ্ডিত পলাতক আসামি এ ধরনের বক্তব্য দিতে পারে কিনা?

মন্ত্রী নির্বাচন কমিশনের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করে আরও বলেন, দুটি মামলায় দণ্ডিত পলাতক এ রকম কেউ এভাবে ভিডিও কনফারেন্স করে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে কিনা- আমি সেটি নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাইছি।

ওবায়দুল কাদেরের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিষয়।

এ সময় নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন নিজেই আচরণবিধি ভঙ্গ করছে।


খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে নির্বাচন মেনে নেয়া যায় না

খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে নির্বাচন মেনে নেয়া যায় না



ভাঁওতাবাজির জন্য সরকারকে গোল্ড মেডেল দেয়া উচিত এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, এতদিন পরে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে যাচ্ছে সেখানে এতবারের সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রী তিনি জেলে থাকবেন, তাকে পরিত্যক্ত পুরনো কারাগারে অপমান করা হবে, আরেকটি দলের নেত্রী সরকারের প্রধান হয়ে নির্বাচন করবেনÑ তা মেনে নেয়া যায় না।
তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করবেন না। বরং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
ভোটকেন্দ্র পাহারা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড. কামাল হোসেন বলেন, আরো বেশি সঙ্ঘবদ্ধ ও সচেতন হতে হবে, তাহলে গুণ্ডা-পাণ্ডারা দুর্বল হয়ে যাবে। একবার নির্বাচন বয়কট করে ভুগতে হয়েছে। ওরা যত ১০ নম্বরই করুক, হাজার হাজার ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে। ঘরে ঘরে গিয়ে জনগণকে বোঝাতে হবে। জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের মহাসমাবেশে গতকাল প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন ড. কামাল হোসেন। খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি এবং ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি মেনে নিতে সরকারকে আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়া হয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হবে। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানান অন্য বক্তারা। 
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে গতকাল জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে আইনজীবীদের এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সারা দেশের আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধিরা মহাসমাবেশে অংশ নেন। বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহারের দাবি করে মুহুর্মুহু স্লোগান দেন আইনজীবীরা। একপর্যায়ে কারাবন্দী খালেদা জিয়ার ওপর লেখা ‘এসো ঐক্য, এসো ঐক্য, দেশমাতার ডাকে ঐক্য’ গান গেয়ে শুনান কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়ার পরিচালনায় মহাসমাবেশে ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, মীর নাছির উদ্দিন, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান এম এ রকীব, গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোহাম্মদ শাহজাহান, অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, মজিবুর রহমান সারোয়ার, বোরহানউদ্দিন, বদরুদ্দোজা বাদল, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, পিপলস লীগের সভাপতি আইনজীবী গরীবে নেওয়াজ, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, খোরশেদ মিয়া, মহসিন মিয়া, গোলাম মোস্তফা খান, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, শফিউদ্দিন ভূঁইয়া, মনসুর রহমান, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, আইনজীবী মনির হোসেন, গোলাম মোস্তফা খান, ইসলামিক ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের এস এম কামালউদ্দিন, জেএসডির কে এম জাবির, এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান, আইয়ুব আলী আশ্রাফী, আনিছুর রহমান খান, ড. রফিকুল ইসলাম মেহেদী, জামালপুরের ওয়ারেস আলী, কুমিল্লার কাইমুল হক রিংকুসহ বিভিন্ন বারের আইনজীবীরা বক্তব্য দেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, সরকার পাঁচ বছর ধরে ভাঁওতাবাজি করেছে। দ্রুত নির্বাচন দেয়ার কথার অর্থ কী ৫ বছর? আলহামদুলিল্লাহ আরেকটি নির্বাচনের কথা বলেছে। এবার বলবÑ আমাদের দাবি মানতে হবে। ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারলে তো স্বাধীনতার ওপর আঘাত করা হবে। বাংলাদেশকে আমরা পরাধীন করতে পারি না। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তাদের সাথে বেঈমানী করতে পারি না। সরকার যেনতেনভাবে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করছে। ১৬ কোটি মানুষ এক দিকে-ওরা এক দিকে। ভাঁওতাবাজির জন্য সরকারকে গোল্ড মেডেল দেয়া উচিত। সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে নিজেরাই প্রতি মুহূর্তে সংবিধান লঙ্ঘন করছে। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই। আদমের সন্তানের তো লজ্জাবোধ থাকা উচিত। তারা কী মানুষ না অন্য কিছু হয়ে গেছে? তাদের লজ্জাবোধ ফিরে আসা উচিত। ২০১৪ সালে নির্বাচন ছাড়াই ১৫৪ জন ঘোষিত প্রার্থী এমপি হলেন। তাদের এমপি নয় জিপি (ঘোষিত প্রার্থী) বলা দরকার। ক্ষমতায় থেকে যে কেউ পার পাবে এটা ভুলে যাও। সরকার আর পার পাবে না। 
ভোটযুদ্ধে নামার জন্য সবাইকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যখন আমরা কোথাও দাঁড়াতে পারি না, আমাদের কথা বলতে দেয়া হয় না, নির্বাচনের জন্য ক্যাম্পেইন করতে দেয় না, আমাদের নেতাকর্মীদের মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে অথবা তারা পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে; তখন আমরা বলছি, না এটাকেই আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। এ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের সাথে নিয়ে আমরা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এ দানবকে পরাজিত করব। আমাদের হাতে সময় খুব কম। যদি জাতিকে বাঁচাতে হয়, বাংলাদেশ ও আমাদের মানুষকে যদি বাঁচাতে হয়, আমাদের স্বাধীনতাকে যদি রক্ষা করতে হয়; তাহলে এটাই উপযুক্ত সময়। আসুন সবাই মিলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটযুদ্ধে নেমে পড়ি। এই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা তাদের পরাজিত করি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, অ্যাডভোকেট নিপুণ রায়সহ আইনজীবীরা সরকারের মিথ্যা মামলায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এমন রাষ্ট্রে বাস করছি যে, আইনজীবীরা পর্যন্ত মিথ্যা মামলায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, কষ্ট করতে হচ্ছে। আদালতেও আজকে আশ্রয় নেই। খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায় সাজা দেয়া হয়েছে। রায় তো ন্যায় হতে হবে। একটি মন্ত্রণালয়ের সচিবের কথায় চলেন বিচারেকরা। গায়েবি মামলা দেয়া হচ্ছে, সাড়ে চার হাজার গায়েবি মামলা। ড. কামাল হোসেন এটা কোর্টে তুলেছেন এখন পর্যন্ত আমরা সুরাহা পাইনি। যেই তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে তার পর থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৪০০ গায়েবি মামলা হয়েছে। কিভাবে নির্বাচন করবেন? এভাবেই করতে হবে। এভাবেই মানুষকে নিয়ে এগিয়ে গিয়ে তাদের এই নির্যাতন, তাদের এই নিপীড়ন, তাদের এই নীলনকশা-চক্রান্তকে বানচাল করে দিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে ভোট বিপ্লব ঘটিয়ে আমরা জয়লাভ করব ইনশা আল্লাহ।
‘সব সাম্প্রদায়িক শক্তি এখন ধানের শীষ’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ওবায়দুল কাদেরের কথায় আমাকে আঘাতও করেছে। তার কথায় ড. কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্না, আমাদের মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, অলি আহমেদÑ যারা মুক্তিযোদ্ধা, আমি সাম্প্রদায়িক শক্তি। এই কথার আমি প্রতিবাদ করছি। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আপনারাই প্রশ্রয় দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন। জাতি জানে কখন কি করেছেন। কারা একসাথে বসে যুদ্ধাপরাধীদের সাথে আন্দোলন করেছেন তা সবাই জানেন। এখনো তাদের সাথে বসে কওমি জননী হয়ে গেছেন এটা সবাই জানেন।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো সুষ্ঠুভাবে করতে পারেনি, জাতীয় নির্বাচন কিভাবে সুষ্ঠু করবে? সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ৩০ শতাংশ ভোটও পাবে না। ইসিকে সাবধান করে দিয়ে তিনি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করুন, সবাইকে সমান সুযোগ দিতে হবে, অন্যথায় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ৭ দফা দাবিতে ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলন চলবে বলেও জানান তিনি।
আ’লীগকে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন : রিজভী

আ’লীগকে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন : রিজভী



একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে নির্বাচন কমিশন বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়া আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজদের ভোটে সুরক্ষা দিতে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা তুলে দিয়েছে ইসি। মূলত আওয়ামী দুর্নীতিবাজদেরকে ভোটে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিতে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার বিধান রদ করে দিয়েছে। আয়কর বিবরণী সনদপত্রে সংক্ষিপ্তভাবে প্রার্থীর আয়-ব্যয় ও সম্পদের বিবরণীর বাধ্যবাধকতা বাতিল করে তাদের সম্পদ ঢেকে রাখার বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়েছে।

আজ রোববার দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, আপনারা ওয়াকিবহাল আছেন বর্তমান সরকারের মন্ত্রী-এমপি-নেতারা জনগণের সম্পদ লুটপাট করে একেকজন অর্থবিত্ত ও সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। কেউ কেউ বিগত দশ বছরে বাংলাদেশের শীর্ষ ধনীদের ‘টপ টেন’ তালিকায় নাম উঠিয়েছেন। পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ায় অহরত কারো কারো বেশুমার সম্পদের কিয়দাংশ খবর বেরুচ্ছে। গত ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক থাকার ফলে দেশের মানুষ জানতে পেরেছে মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদ একশো গুণ থেকে পাঁচশো গুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। স্ত্রীরাও পাল্লা দিয়ে গড়েছিলেন সম্পদের পাহাড়। ২০০৮ সালে ধারদেনা করে নির্বাচন করেছেন এমন এমপিরাও কয়েকশো কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সাথে যোগ হয়েছে বাড়ি, ফ্ল্যাট, ব্যাংকে নগদ টাকা, জমি, শিল্প প্রতিষ্ঠান, শেয়ার-সঞ্চয়পত্র, এফডিআর ইত্যাদি। কিন্তু ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্তও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে হরিলুট হয়েছে, লুটপাটের কারণে ব্যাংকগুলোতে অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে। দেউলিয়া হওয়ার পথে অধিকাংশ ব্যাংক। সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতির কারণে মানুষের জীবন দুুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের কি পরিমাণ সম্পদ বেড়েছে সেটি যাতে জনগণ জানতে না পারে সেজন্য আওয়ামী সরকারের বংশীবাদক নির্বাচন কমিশন আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থীদের রিটার্ন দাখিল করার বাধ্যবাধকতার বিধান তুলে দিয়েছে। বর্তমান সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতির খবর ঢেকে রাখতেই আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেনি ইসি। ফলে আওয়ামী লীগের অনেকেই সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব বকেয়া রেখেও আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। করযোগ্য নয় বলে অনেকেই মিথ্যা তথ্য দিবেন। আইনী শিথিলতার সুযোগে নির্বাচনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে প্রচার-প্রচারণা চালালেও করযোগ্য আয় নেই বলে নির্বাচন কমিশনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পার পেয়ে যাবেন।

রিজভী বলেন, সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার বিধানটি কেবল বাদ দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন। এমনকি টিআইএন না থাকলেও প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র এবার বাতিল হবে না বলে আইন করা হয়েছে। আর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করে একইসঙ্গে ঋণ ও বিল খেলাপীদের প্রার্থী হওয়ার শর্ত সহজ করেছে এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। গত ৩১ অক্টোবর সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সাথে বৈঠক শেষে ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এখন থেকে প্রার্থীদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে না। আগে সকল প্রার্থীর আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া বাধ্যতামূলক ছিল, কিন্তু এখন তা বাধ্যতামূলক নয়। যাদের ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) আছে কেবল তারাই জমা দিবেন, আর যাদের নেই তাদের জমা দেয়ার প্রয়োজন নেই।’

তিনি বলেন, ইসি সচিব আরো বলেছেন, ‘আগে নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে ঋণ খেলাপীদের মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার সাত দিন পূর্বে ঋণ বা কিস্তি পরিশোধের বিধান ছিল এবং ব্যাংক থেকে কোনো কিস্তি বকেয়া নেই এমন সার্টিফিকেট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়ার বিধান ছিল। বর্তমান বিধান অনুযায়ী একদিন আগেই ঋণ পরিশোধ করেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন।’ সেক্ষেত্রে জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের পেপারস জমা দেয়া সম্ভব। কারণ তখন যাচাই-বাছাই করার মতো সময় ও সুযোগ নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকবে না। বড় ঋণ খেলাপীরা আইনে বড় সুযোগ পেলেও ছোট খেলাপীদের ক্ষেত্রে তা নেই। কৃষকদের বেলায়ও আইনের উল্টোটা করা হয়েছে। আরপিওর ১২ (১) এর এল উপধারা সংশোধন না হওয়ায় কৃষি কাজের জন্য গৃহীত ক্ষুদ্র কৃষি ঋণ সাত দিন পূর্বে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। তা না হলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবে। আরপিওর ১২ (১) এর এন উপধারা সংশোধন না হওয়ায় ব্যক্তিগতভাবে মনোনয়ন পত্র দাখিলের সাত দিন আগে বকেয়া টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যূৎ, পানি বা অন্য কোন সেবা প্রদানকারী সংস্থার বিল পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবে। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসি’র জারি করা পরিপত্র-১ এ এই বৈষম্য চিত্র ফুটে উঠেছে।

রিজভী বলেন, সংশোধিত আরপিওর কারণে আওয়ামী লীগের দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থীদের জালিয়াতি করার সুযোগ বেড়ে যাবে। নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে সরকার এই দুর্নীতিবাজদের এই সুযোগ দিয়েছে। ফলে এবারের নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি হবে। দখল আর দুর্নীতির অন্ত:ক্রিয়াই আওয়ামী সংস্কৃতি। চাঁদপুরের ডিসি কদিন আগে বলেছেন, ‘আমি নিরপেক্ষ থাকতে পারবো না, নিরপেক্ষ থাকলে খারাপ লোকজন চলে আসবে, উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।’ বিএনপির একজন নেতা ডিসিকে টেলিফোনে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের সাক্ষাতের অনুমতি চাইলে তিনি দিবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

দেশজুড়ে চলমান গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীর চকবাজার থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম রাসেলকে গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছে। সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ করার পরও তার সন্ধান মিলছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই তাকে আটক করেছে, অথচ তারা এখনো পর্যন্ত তাকে আটকের বিষয়টি স্বীকার করছে না। আমি আবারও অবিলম্বে শফিকুল ইসলাম রাসেলকে জনসমক্ষে হাজির করার জোর দাবী জানাচ্ছি। শাহজাহানপুর থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ ভূঁইয়াকে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি এখনো স্বীকার করছে না পুলিশ। আমি অবিলম্বে তাকেও জনসমক্ষে হাজির করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

তফসিল ঘোষণার পর যশোরে বাঘারপাড়া বিএনপি নেতা রেজাউল ইসলাম, আব্দুল্লাহ, হামিদুর, ড. ওয়াহিদ, আলমগীর হোসেন, আব্দুল ওয়াহিদ, সাইদুর রহমান, নাজিম উদ্দিন, আহমেদ আলী, বাবুল আহমেদ, সিদ্দিকুর রহমান ও মোস্তফা এবং অভয়নগরের বিএনপি নেতা আতাউর রহমান, হারুন, সাঈদ, আলমগীর, ইয়ামিন, যুবদল নেতা বাকি উজ্জামান, সাইদুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাসায় গিয়ে তাদের পরিবারের নিকট থেকে টাকা দাবি করছে পুলিশ। তফসিলের পরে উল্লিখিত স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে ৯টি বানোয়াট ও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমি নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে মিথ্য মামলা প্রত্যাহারসহ তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।
 হিরো আলম ও রাজনৈতিক ভেলকি

হিরো আলম ও রাজনৈতিক ভেলকি



গত সাত বছরে বেকারের হার দ্বিগুণ হলো, দেশে স্বঘোষিত হিরোদের বাজার আরও আরও চাঙা হলো। সরকারি দলের মনোনয়ন পাওয়াকেই অনেকে ভাবছেন নিশ্চিত নির্বাচনী বিজয়। ভাবছেন, শুল্কমুক্ত কোটার গাড়ি, ব্যাংকঋণের জোয়ার, পরিবারের সদস্যদের ‘অপরাধ’ মাফের সুযোগ, ভোগ-বিলাস-খ্যাতি, সবই বুঝি হাতের মুঠায় এসে গেল। তাঁরা সম্ভবত ২০১৪ সালের বিরোধীমুক্ত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১৫৩ জন প্রার্থীর সৌভাগ্যকে হিংসা করে ঝোপ বুঝে কোপ মারতে নেমেছেন। নইলে ভুঁইফোড় এত লোক কেন প্রার্থী হতে যাবেন, টাকা খরচ করে নির্বাচন করবেন? এমন নিশ্চয়তা তাঁদের কে দিয়েছে? তাঁরা কি বোকা, নাকি অতি চালাক?
এর মধ্যে মওকা বুঝে হিরো আলম রাজনীতিতে নামলেন। কিন্তু তিনিই কি প্রথম? কত কত স্বঘোষিত হিরো আগেভাগেই কায়েম হয়ে আছেন। এবারেও অনেকে মনোনয়নপত্র কিনে বসে আছেন, ফেসবুকে বা মিডিয়ায় প্লাস্টিক-প্লাস্টিক হাসিমাখা ছবি দিচ্ছেন। কোনো কিছু না-করার হিরোইজমের তালিকায় হিরো আলম বরং শেষের দিকের লোক। কত কত অযোগ্যতা নিয়ে যাঁরা কেউ সেলিব্রিটি, কেউ বিখ্যাত সাংবাদিক, কেউ ক্ষমতাশালী রাজনীতিবিদ হয়ে আছেন, তাঁদের বেলা তো সবাই চুপ। কেউ টাকা আছে বলে নেতা সেজেছেন, কেউ বিখ্যাত কারও পুত্র বা কন্যা বলে গণমাধ্যম মাতাচ্ছেন, কেউবা এমনি এমনি ভাব ধরে আছেন ক্ষমতার আশ্রয়ে। কই, তাঁদের তো কেউ প্রশ্ন করে না যে ‘আপনার কী যোগ্যতা?’। টাকা, পরিবার বা ক্ষমতা পেছনে আছে বলে তাঁরা পাস, আর হিরো আলম ফেল? হিরো আলম প্রচলিত অর্থে গুণবান ও বিত্তবান না হয়েও নিজেকে তুলে ধরতে পেরেছেন। এদিক থেকে নামকরা অনেক পরিবারের পুত্র-কন্যাদের চেয়ে তিনি গুণধর।

একজন যথার্থই বলেছেন, যে রাজনীতিতে সাবেক স্বৈরাচার কিংবা ডিগবাজিবিদেরা ক্লাউন, সেই রাজনীতির মঞ্চে হিরো আলমই নায়ক। যে রাজনীতিতে বিরোধী প্রার্থীরা ধাওয়ার ওপর, সেই রাজনীতির ভয়ংকরতা ঢাকতে ও মানুষকে মজাদার আলোচনায় ব্যস্ত রাখতে হিরো আলমদের প্রয়োজন। হিরো আলম নিয়ে সামাজিক মাধ্যমের মাতোয়ারাকে আরেকভাবেও দেখা যায়। এসব রং-চড়ানো ইস্যু দিয়ে নির্বাচনী রাজনীতির মূল প্রশ্নগুলো থেকে দৃষ্টি সরিয়ে রাখা হচ্ছে কি?
হিরো আলম যে বর্তমান সরকারের জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টির লোক, সে কথাটাও ভুলে যাওয়া যায় না। টিভির টক শোতে গ্রামের ছেলে হিরো আলমকে নিয়ে মশকরা করেন কিছু সাংবাদিক। জাতীয় পার্টি সরকারের পেয়ারের পার্টি। সেই পার্টির প্রার্থীকে যদি তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা যায়, ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হলে হিরো আলমকে নির্ঘাত ধাওয়া করা হতো। এমন মশকরা, জেরা করার কায়দায় প্রশ্ন করার ‘স্টাইলটা’ নতুন নয়। এভাবেই প্রশ্নের নামে বানানো ফাঁদ, মশকরা ও ধমকের মুখে পড়তে হয়েছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাসহ বিখ্যাত কয়েকজন ব্যক্তিকে। সাংবাদিকতার এই রূপ আমাদের কে দিয়েছে?
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও গণমাধ্যম ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা আমরা আশা করতে পারি না। তারপরও বিরোধীদের কিছুটা সুযোগ থাকলে খবর ও টক শোতে ক্ষমতাসীনদের পাশাপাশি তাঁদেরও কথার খই ফোটাতে দেখা যেত। মানুষ ওই সব তর্ক দেখে-শুনে নিজেদের পছন্দ ঠিক করতে পারত। দুঃখের কথা, তেমন পরিবেশ বহুদিন হলো নেই। তাহলেও বিরোধী পক্ষের শূন্যতা তো পূরণ করতে হবে। সংসদে, রাজপথে, টক শোতে তাদের আসনগুলো তাই বিকল্প লোকজন দিয়ে ভরাতে হবে। সেই বিকল্প মানুষেরা সব বলবেন, কিন্তু আসল কথাটা বলবেন না। এমন পরিস্থিতিতেই জামানত বাতিল হওয়া এলিট প্রার্থীরা বিশাল গুরুত্ব পেয়ে যান। স্বঘোষিত হিরোরা প্ল্যান বি প্ল্যান সির লারেলাপ্পা দেখান, হঠাৎ ধনকুবেরেরা মনোনয়ন-বীর হয়ে যান। দলে দলে তারকারা ‘বিফলে মূল্য ফেরত’ টাইপ মনোনয়নপত্র কেনার হিড়িক লাগিয়ে দেন। হিরো আলমের ঘটনাটা এই পরিহাস হয়ে ওঠা জাতীয় ট্র্যাজেডিরই অংশ। তিনি চলমান রাজনৈতিক মেগা সিরিয়ালের মৌসুমি এক চরিত্র মাত্র। পরিহাসটা আরও মারাত্মক হয় যখন সত্যিকার হিরো মাশরাফি বিন মুর্তজা সরকারি দলের মনোনয়নপত্র কিনে হন বিতর্কিত আর মিডিয়ার তুলে আনা হিরো আলম হয়ে যান ‘সিরিয়াস’ ও গম্ভীর লোক।
মাশরাফি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি বীর নন। তাঁর কাজ খেলা দিয়ে দর্শকদের বিনোদন দেওয়া। তাঁর নজরে সত্যিকার হিরো হলেন কৃষক-শ্রমিক-ডাক্তার-প্রকৌশলী, এঁরা। অথচ আমরা জানি, জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের আত্মবিশ্বাস সৃষ্টিতে, অনেকগুলো জয় আনায় তাঁর ভূমিকা অনন্য। কিন্তু যে-ই তিনি ক্যাপ্টেন থাকা অবস্থায় অবিভক্তভাবে সরকারি দলে চলে গেলেন, অমনি তাঁর ভক্তরা বিভক্ত হয়ে গেল। সংসদীয় আসন পেতে গিয়ে মাশরাফির জাতীয় নায়কের আসনটা টলে উঠল। কিন্তু তিনি জানেন না যে রাজটিকা ছাড়া আর কোনো পরিবার থেকে ‘হিরো’ আসার গণতন্ত্র বাংলাদেশে কখনো ছিল না, এখনো নেই। যে রাজনীতি আসল হিরোদের যত্নসহকারে ‘জিরো’ বানাতে পারঙ্গম, সেই রাজনীতি জিরো থেকেই হিরো বানাবে। আর তাতে উৎসাহী হবেন হিরো আলমের মতো বেকার যুবকেরা। প্রথম আলোর আজকের খবর, ‘২৭.৪% তরুণ নিষ্ক্রিয়; পড়ালেখা, প্রশিক্ষণ অথবা কাজে নেই।’ যত বেশি উচ্চশিক্ষিত, বেকারত্ব তত বেশি। পড়ালেখা করে যে বেকারত্বে ভোগে সে—এটাই এখন বাস্তবতা। এদের সংখ্যা কোটি কোটি। এমন দেশে হিরো আলম সাহস করে পড়ালেখার পথে না গিয়ে ‘হিরো’ সেজে এবং এখন নিরাপদ দলের প্রার্থী হয়ে বুদ্ধিমানের কাজই করেছেন।
হিরো আলম তাই মাশরাফির বিপরীত। মাশরাফির মতো সংগ্রামী হিরোদের সীতার মতো বারবার পরীক্ষা দিয়ে যেতে হয়। মুফতে পাওয়া খ্যাতি বিনিয়োগ করা বরং সহজ। আলমকে আগে কেউ সিরিয়াসলি নিত না। মনোনয়নপত্র কিনে তিনি হয়ে উঠলেন সিরিয়াস লোক। এলিট মহলের লোকেরা যখন তাঁকে উপহাস করছে, তখন শান্ত ভঙ্গিতে উকিলি যুক্তি দিয়ে তিনি দেখালেন কয়েকটি মিডিয়ার ‘এলিট বায়াস’। হিরো আলমের এই উত্থান বাংলাদেশের নিম্নবর্গীয় তরুণদের উঠে আসার গল্পের সঙ্গে মেলে। সবার বেলায় সেটা সুন্দর হয় না। কেউ মাস্তানি করে করে ব্যবসায়ী হন, সেখান থেকে নেতা হন, তারপর হয়ে যান মন্ত্রী বা সিআইপি-ভিআইপি। কেউবা চাষবাস বা ছোট ব্যবসা কিংবা প্রবাসে মজদুরি করে ধীরে ধীরে পরিবারটিকে উঠিয়ে আনেন। তাঁদেরই সন্তানেরা কোটা সংস্কার আন্দোলনে ন্যায্যতার দাবি নিয়ে হাজির হন। এঁদের সন্তানেরাই কিশোরী ফুটবল দল গঠন করে দেশে-বিদেশে চমক লাগান। ইউটিউবে এঁদেরই কারও গান দেশ-বিদেশ মাতায়। আরও তলার দিকে তাঁদের পরিবার সামাল দিচ্ছে লুটেরা অর্থনীতির যাবতীয় ধ্বংসাত্মক আঘাত, আয় কমে আসার ধাক্কা। হিরো আলমের মধ্যে এই শ্রেণির জেদ দেখা গেলেও তাঁর পথটা আলাদা। তিনি নিয়েছেন বিরোধী দলকে কোণঠাসা করার রাজনৈতিক বাস্তবতার সুযোগ। যে বাস্তবতা বেকার ও প্রতিবাদী তৈরি করে, তৈরি করে হাজারো নিরীহ ‘আসামি’, সেখানে হিরো আলমদের পথই নিরাপদ পথ। সাধারণত অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই এমন ধারার হিরোদের উত্থান ঘটে। সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার সময়ে উড়ে এসে জুড়ে বসার সুযোগ কমই থাকে।
ফারুক ওয়াসিফ: লেখক, প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক।