Showing posts with label বাংলাদেশ. Show all posts
Showing posts with label বাংলাদেশ. Show all posts
মাদারীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আট, আহত ৪৫

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর সদর উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মাহফিলের যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে সাতজনের মুত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৪৫ জন যাত্রী।
অপরদিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম বাবনাতলা নামক স্থানে একই দিন বেলা ১২ টার দিকে ট্রাক ও মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে অপর একজন মারা গেছেন।
নিহতরা হলেন, হাবিব হাওলাদার (৫০), আব্বাস খান (৩২), হাসিয়া বেগম (৫৫), হাসান (১৪), আক্কাস (৪০), নয়ন (২৭), সায়েম (২৫)। তাদের সবার বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলা ও কালকিনি উপজেলার ভাঙ্গাব্রিজ, পান্তাপাড়া, খৈয়রভাঙ্গা এলাকায়। অপরদিকে রাজৈরের মোটর সাইকেলে দুর্ঘটনায় নিহতের নাম নাঈম বেপারী (২৫)।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের চন্দ্রপাড়া মাহফিলে অংশ নেয়ার জন্য মঙ্গলবার বাড়ি থেকে চন্দ্রপাড়া যান মুসল্লিরা। বৃহস্পতিবার সকালে মাহফিল শেষে চন্দ্রপাড়া থেকে মাদারীপুর কালকিনির ভাঙ্গাবীজ এলাকায় সুবিন-নবীন নামের একটি লোকালবাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন তারা।
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সদর উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাককে সাইট দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায় বাসটি।
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সদর উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাককে সাইট দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায় বাসটি।
এ সময় ঘটনাস্থলে চারজন মারা যান। হাসপাতালে নেওয়ার পরে মারা যান আরো তিন জন। এ ঘটনায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে প্রায় ৪৫ জন যাত্রী। খবর পেয়ে মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনার পর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আহত ও নিহতের আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভীড় করে এবং কান্নায় ভেঙে পড়েন। মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খানসহ স্থানীয় নেতা-কর্মী ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় তারা নিহত ও আহতদের আত্মীয়-স্বজনদের সান্তনা দিয়ে শোক প্রকাশ করেন।
হাসপাতালে আসা নিহতের এক স্বজন বলেন, শুনেছি আমার ভাই মারা গেছে। তাই হাসপাতালে এসেছি। আনন্দ করতে করতে আমার ভাই চন্দ্রপাড়ায় পীরের বাড়ি গেল। আর ফিরল লাশ হয়ে। এই শোক কীভাবে সহ্য করব।
হাসপাতালে আসা স্থানীয় সুমন হোসেন, স্বপন মাহমুদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় এক সাথে এতগুলো লাশ দেখে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালাদার জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত হলেও এর সংখ্যা বাড়তে পারে।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক অখিল সরকার বলেন, দুর্ঘটনায় এই পর্যন্ত সাতজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ৪৫ জনের মতো। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। আমরা আহতদের যথাসাধ্য চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। গুরুতর বেশ কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
অপরদিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম বাবনাতলা নামক স্থানে বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে ট্রাক ও মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে নাঈম বেপারী মারা যান। নাঈম মাদারীপুর শহরের বাগেরপাড় এলাকার ইব্রাহিম বেপারীর ছেলে এবং মাদারীপুর বিকাশের এসআর ছিলেন।
সকালে বিকাশের কাজের জন্য মোটরসাইকেল নিয়ে মাদারীপুর থেকে টেকেরহাট যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় লোকজন নাঈমকে উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
পোড়া ভবন থেকে বের করা হচ্ছে একের পর এক লাশ

বনানীর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। আজ বৃহস্পতিবার রাত আটটা পর্যন্ত এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ জনে। আর আহতের সংখ্যা ৭০ জন বলে জানা গেছে।
ফারুক রূপায়ণ (এফ আর) টাওয়ারে লাগা ওই অগ্নিকাণ্ড সন্ধ্যার দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে। এর পর ভবনটির বিভিন্ন ফ্লোরে প্রবেশ করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আর এতেই বের হতে থাকে একের পর লাশ।
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্থাপিত ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুম থেকে রাত আটটার দিকে নিহতের সংখ্যা ১৯ ও আহতের সংখ্যা ৭০ বলে জানিয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরমান আলীর বক্তব্য থেকে নিহতদের মধ্যে সাতজনের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন, পারভেজ সাজ্জাদ (৪৭), আমেনা ইয়াসমিন (৪০), মামুন (৩৬), শ্রীলঙ্কার নাগরিক নিরস চন্দ্র, আবদুল্লাহ আল ফারুক (৩২), মাকসুদুর (৬৬) ও মনির (৫০)।
পুলিশ সূত্রে থেকে জানানো গেছে, আমেনা মারা গেছেন অ্যাপোলো হাসপাতালে। পারভেজ সাজ্জাদ বনানী ক্লিনিকে, নিরস চন্দ্র কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এবং মামুন, মাকসুদুর ও মনির ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা গেছেন। এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন আবদুল্লাহ আল ফারুক।
আল্লাহ তুমি সবাইকে রক্ষা করো

রাজধানীর বনানীর ১৭ নম্বর রোডে এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ১৩টি ইউনিট। এতে এখন পর্যন্ত একজন নিহত হয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২.৫০ মিনিটে এফআর টাওয়ারের ৯ তলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। পরে এর ব্যাপকতা বাড়ে। ১১ তলা পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে। টাওয়ারের
ভেতরে অসংখ্য লোকজন বন্দি আছেন।
বিষয়টি কানে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের। সবাইকে রক্ষার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া চেয়েছেন তারকা পেসার রুবেল হোসেন।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, ঢাকা বনানীর এফ আর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। আটকা পড়েছে অনেক মানুষ। হে মহান আল্লাহ তুমি সবাইকে রক্ষা করো। আমিন।
প্রাণ বাঁচাতে ভবন থেকে লাফ, জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে আকুতি

বানানীর এফআর ভবনে লাগা আগুন থেকে বাঁচতে বেশ কয়েকজনকে লাফ দিতে দেখা গেছে। এ সময় অনেককে জানালা দিয়েও হাত বাড়িয়ে উদ্ধারের আকুতি জানাতে দেখা যায়।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটার দিকে বনানীর ২২ তলা ভবনটি ভয়াবহ আগুন লাগে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, আগুন লাগার খবর পেয়েই আগুন নেভানোর কর্মীরা ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হন। বেলা ২টা নাগাদ ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে যাচ্ছিল।
এদিকে আগুন থেকে বাঁচতে কয়েক ব্যক্তিকে ভবনটির বিভিন্ন তলা থেকে বের হতে দেখা যায়। উপায় না দেখে পরে কয়েকজন লাফ দেন। নিচে পড়ে যাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে তাদের উদ্ধার করেন উপস্থিত লোকজন। পরে তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ ছাড়া কয়েকজনকে ভবনের আশপাশে থাকা তার ধরে নিচে নামার চেষ্টা করতে দেখা যায়। তবে তাদের কেউ কেউ নিচে পড়ে যান। ভবনের ওপরে আকাশে হেলিকপ্টার টহল দিতে দেখা গেছে।
ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভবনটিতে রেস্তোরাঁ আছে। আছে অফিস। আগুন লাগার সময় ভবনের ভেতরে অনেক লোকজন ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভবনের অষ্টম তলায় আগুন লেগেছে বলে তারা প্রথমে জানতে পারেন। পরে অন্য তলায়ও আগুন ছড়ায়। একপর্যায়ে পুরো ভবন আগুন ও আগুন থেকে সৃষ্ট কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। ফলে ঠিক কোন কোন তলায় আগুন ছড়িয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
ওই ভবনে কয়েকটি গার্মেন্ট বায়িং হাউজ এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের অফিস রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
বনানীর এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ আগুন

রাজধানীর বনানীর বহুতল এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটার দিকে এই আগুন লাগে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, আগুন লাগার খবর পেয়েই আগুন নেভানোর কর্মীরা ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হন।
বেলা ২টা নাগাদ ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছিল বলে জানান যায়।
এফআর টাওয়ারটি বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউতে অবস্থিত। ভবনটি ২২ তলা বলে জানা গেছে।
ভবনে বিভিন্ন অফিস আছে। ঘটনাস্থলে থাকা লোকজনের ভাষ্য, আগুন লাগার সময় ভবনের ভেতর অনেক লোকজন ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ভবনের সপ্তম বা অষ্টম তলায় আগুন লেগেছে বলে তাঁরা প্রথমে জানতে পারেন। পরে অন্যান্য তলায়ও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে পুরো ভবন আগুন ও আগুন থেকে সৃষ্ট কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। এতে ভবনটির কোন কোন তলায় আগুন ছড়িয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
আগুন থেকে বাঁচতে কয়েক ব্যক্তিকে ভবন থেকে বের হতে লাফ দিতে দেখা গেছে। তাঁরা নিচে পড়ে যাওয়ার পর তাঁদের উদ্ধার করেন উপস্থিত লোকজন।
ভবনের ওপরে হেলিকপ্টার টহল দিতে দেখা গেছে।
ভবনের ওপরে হেলিকপ্টার টহল দিতে দেখা গেছে।
আগুন লাগার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। হতাহতের বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্যও জানা যায়নি।
আটকে পড়াদের উদ্ধারে অংশ নিল সেনাবাহিনী

রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউর এফআর টাওয়ারে আটকে পড়াদের উদ্ধার করতে অংশ অংশ নিয়েছেন সেনাবাহিনী সদস্য। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে ভবনের ভেতর থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে ভবনটির ৯ তলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে।
আটকে পড়াদের এয়ার লিপ্টের মাধ্যমে উদ্ধার করা হচ্ছে। এছাড়াও উদ্ধার ও আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে ফায়ার সার্ভিসসহ নৌবাহিনীর ফায়ার টিম এবং বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার। আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে কাজ করছে এছাড়াও ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভেতরে অনেকে আটকা পড়েছেন। এদিকে ভেতর থেকে জীবন বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে সিঁড়ি পাঠানোর কথা বার বার বলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে আমাদের দয়া করে বিকল্প সিঁড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। আর না হলে আমরা মারা যাব।
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাধারণ মানুষ স্বেচ্ছাসেবীর ভূমিকা রাখছেন। আশপাশের এলাকায় পানির সন্ধান করা, পাইপ টেনে নিয়ে যাওয়ায় দমকর্মীদের সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়তে দেখা গেছে অসংখ্য মানুষকে।
লাখো শহীদের স্মরণে লাখো মোমবাতি প্রজ্বলন

২৫ মার্চ কালরাত্রিতে বর্বর পাক হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদদের স্মরণে বগুড়ায় আয়োজন করা হয়েছিল ব্যতিক্রমী আলোক প্রজ্বলন। ‘লাখো শহীদের স্মরণে লাখো প্রদীপ জ্বালো’ শিরোনামে এই অনুষ্ঠানে বগুড়া জেলা শহর ছাড়াও উপজেলা পর্যায়ের হাজারো জনতা অংশ নেয়।
বগুড়া জেলা পুলিশ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, জেলার পেশাজীবী ও শ্রমজীবী সংগঠন যৌথভাবে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
২৫ মার্চ সন্ধ্যা ৬টায় নির্ধারিত ভেন্যুতে উপস্থিত হন সবাই। এরপর সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১০ মিনিট মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। শহরের মূল ভেন্যু ছিলো আলতাফুন নেছা খেলার মাঠ। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান।
বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ। শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ ছাড়াও বগুড়া জিলা স্কুল মাঠ, সদর উপজেলা চত্বর, টিএমএসএস, শাজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলা চত্বর, ধুনট এনইউ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, গাবতলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, সারিয়াকান্দি পাবলিক মাঠ, শিবগঞ্জ গোল চত্বরের মুক্তিযোদ্ধা স্তম্ভ, শেখ সোনাতলা শেখ রাসেল স্টেডিয়াম, দুপচাঁচিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, আদমদিঘী আইপিজে স্কুল মাঠ, নন্দীগ্রাম মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ মাঠ, কাহালু মডেল স্কুল মাঠসহ ১৪টি ভেন্যুতে একসঙ্গে লাখো প্রদীপ প্রজ্বলন করা হয়।
পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানান, ১ লাখ ৩০ হাজার মোমবাতি বিতরণ করা হয়। এ ছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই মোমবাতি প্রজ্বলন করেছেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী, পরিবহন মালিক শ্রমিক, চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
এদিকে একই সময় শিবগঞ্জ উপজেলা সদরের গোল চত্বরের মুক্তিযোদ্ধা স্তম্ভে থানা পুলিশ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে লাখো শহীদের স্মরণে হাজারো জনতার অংশগ্রহণে মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়। এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর কবির। এতে বক্তব্য দেন সহকারী পুলিশ সুপার (শিবগঞ্জ সার্কেল) মশিউর রহমান মন্ডল, নব-নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ রিজু, পৌর মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক, শিবগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক প্রমুখ।
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে গণহত্যা দিবস পালন

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে নিহতদের স্মরণে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে গণহত্যা দিবস পালন করা হয়েছে। দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী,তাদের পরিবার এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে মোমবাতি জ্বালিয়ে দূতাবাস প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিন করে গণহত্যা ও স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে গণহত্যায় নিহত শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ২৫ মার্চ রাতে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় আসে।
২৫ মার্চের গণহত্যাকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন বগুড়া জেলা বাসি।

বগুড়া জেলা পুলিশের আয়োজনে লাখো শহীদ স্মরণে
লাখো প্রদীপ জ্বালো অনুষ্ঠানে হাজার হাজার জনগন মোমবাতি জ্বালিয়ে শহীদদের প্রতি সম্মান জানায় উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এডিশনাল আইজি মোখলেছুর রহমান বিপিএম বার
স্বাধীন বাংলাদেশে শুয়ে আছে রক্তের উপরে। শুধুমাত্র সামান্য ক’টি মানুষের রক্ত নয়। লক্ষ লক্ষ মানুষের রক্ত নদীর ধারার উপরে। তিরিশ লক্ষ শহীদের রক্তের উৎসর্গ পাত্রটি হৃদয়ে ধারণ করে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এর আগে আর কখনো এতো রক্তের নির্গমন দেখেনি। মানবিক ও লৌকিক বাস্তবতার এতো ত্যাগ খুব কম দেশই স্বাধীনতার জন্য বিসর্জন দিতে পেরেছে। বাংলাদেশতাই হয়ে উঠেছে মুক্তিকামী মানুষের এক বিস্ময়কর রক্তরঞ্জিত প্রত্নশক্তি। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ গড়ে তুলেছিল এই শাশ্বত সৃষ্টি, এই অমর কীর্তি। অর্জিত সে কীর্তির উপর আজ বসবাস করছে পনেরো কোটি স্বাধীন বাঙালি। সর্বসুবিধা ভোগ করছে একটি স্বাধীন দেশের। নেতানেত্রী বনে যাওয়ার, মন্ত্রী, আমলা, ডাক্তার, ব্যবসায়ী প্রকৌশলী বনে যাওয়ার অফুরন্ত সুযোগ ভোগ করছে।একটি স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রের শাসনতন্ত্রে কাজ করার সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। একাত্তরের বাঙালি রুখে দাঁড়াতে না পারলে, এতো ত্যাগ বিসর্জন না হলে, বাঙালিদের চিরকাল পাকিস্তানি উপনিবেশিক শেকলে বন্দী থেকে ভৃত্যের মতো বসবাস করতে হতো। মুক্তিযুদ্ধের এই ত্যাগকে আজ যারা হেয় প্রচার করছে, তারাই এই রাষ্ট্রের সর্বসুবিধা ভোগের আয়াসে চেটেপুটে খাচ্ছে।পাকিস্তানিদের পদলেহনকারী এই নির্লজ্জ দালালরা লক্ষ লক্ষ বাঙালির আত্মোৎসর্গকে হাজার মানুষের হত্যাকান্ড হিসেবে কটুক্তি করে থাকে। স্বাধীনতাকে খাটো করে দেখার এই প্রবৃত্তি জন্ম নেয় একধরনের হীনমন্যতা বোধ থেকে। পাকিস্স্তানিদের দালালি করার অবৈধ ও অশ্লীল সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত হওয়ার অপমান বোধ থেকে তারা এই নেতিবাচক প্রচার প্রচারণা চালাতে তৃপ্তি বোধ করে। মুষ্টিমেয় সংখ্যালঘিষ্ট এই তাহজীব তমুদ্দুনজীবী গোষ্ঠী এ ধরনের নিন্দাবাদের স্রষ্টা ও প্রচারক। যুদ্ধাপরাধ সেসময় এরাই ঘটিয়েছিল। বুদ্ধিজীবি হত্যা, ধর্মের নামে নারকীয় অত্যাচার উৎপীড়ন, খুন, জখম, রাহাজানি, ধর্ষন প্রভৃতি নারকীয় দুঃশাসনিক কর্মকান্ড এদের মাধ্যমেই বিকাশ ঘটেছিল উপনিবেশিক শাসকের নির্দেশে বা ছায়ায়। এরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়টিকেএতকাল পরে এদেশের মানুষকে বিভক্ত করার কৌশল হিসেবে প্রচার করে। যুদ্ধাপরাধ নিয়ে এদের মস্তিষ্ক প্রসূত উদ্ভাবনা যে শুধু বিকৃত চিন্তার ফসল তা কিন্তু নয়। এটা হচ্ছে অপরাধকে আড়াল করার এক ধরনের অপকৌশল। কেননা যুদ্ধাপরাধী হিসেবে নিজেদের কৃতকর্ম তাদের আতঙ্কিত করে তুলছে। এদেশের মানুষের এই নবজাগরণ তাদের এতটাই ভীত করে তুলেছে যে,পূর্বকৃত্যের ভুলের মাশুল গোপন করার জন্য তারা উঠে পড়ে লেগেছে। সমাজ ও ইতিহাস সচেতন মানুষের সংগ্রামী চেতনাকে বিভ্রান্ত করে তোলার জন্য তারা একের পর এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
উত্তাল সিলেট পরীক্ষা স্থগিত ক্লাস বর্জনসহ ৩ দিনের কর্মসূচি

সিলেট ব্যুরো : গত শনিবার সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের শেরপুর নামক এলাকায় বাস চাপায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় গতকাল উত্তাল ছিল সিলেট মহানগরী। খণ্ড খণ্ড মিছিল সহকারে সিকৃবির শিক্ষার্থীরা নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে মানববন্ধন করে। এরপর চালক ও হেলপারের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে বিশাল মানববন্ধন পালন করে। গোটা নগরীতে যানজট দেখা দেয়। এক সময় সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের গাড়ীও আটকা পড়ে মানববন্ধের সামনে। এ সময় সাবেক মন্ত্রী সিকৃবির শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন। সিকৃবির শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা স্থগিত ও ক্লাস বর্জন সহ ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে ৫ দফা দাবী উপস্থাপন করে।
জানা যায়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ঘোরি মো. ওয়াসিম আব্বাসকে বাসচাপা দিয়ে হত্যার প্রতিবাদে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চৌহাট্টায় সড়ক অবরোধ করেন। রবিবার সকাল ১১টার দিকে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ওয়াসিমের সহপাঠীরা। দুপুর ১২টার দিকে তারা নগরীর চৌহাট্টায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। শিক্ষার্থীদের অবরোধে চৌহাট্টার চার দিকে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে। এ সময় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দুর্ঘটনার মামলা নয়, দুর্ঘটনার মামলাকে হত্যা মামলায় নিতে হবে। তিনদিনের মধ্যে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এ তিনদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা ওয়াসিমের হত্যার প্রতিবাদে বাসচালক ও হেল্পারকে আইনের আওতায় এনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর, ঘাতক ‘উদার পরিবহন’ বাসের রুট পারমিট ও লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানান। এছাড়া নিরাপদ সড়কের দাবিতে তারা কোন ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা একই সময় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে চালক ও হেলপারের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের ও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
শিক্ষার্থীদের পাঁচদফা
এদিকে সিকৃবি শিক্ষার্থী ঘোরি মো. ওয়াসিম আব্বাসকে বাসচাপা দিয়ে ‘হত্যার’ প্রতিবাদে আন্দোলন করছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রোববার তারা সিলেট নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে পাঁচদফা দাবি জানিয়ে অবরোধ তুলে নেন তারা।
শিক্ষার্থীদের পাঁচদফা দাবির মধ্যে আছে- অভিযুক্ত চালক ও হেলপারের ফাঁসি দ্রুত কার্যকর করা, উদার পরিবহরেন রোড পারমিট ও লাইসেন্স বাতিল করা, লাইসেন্স ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি মহাসড়কে চলতে না দেয়া, অদক্ষ চালক দিয়ে গাড়ি না চালানো এবং সড়কে শিক্ষার্থীসহ সকল যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
উল্লেখ্য, গত শনিবার বিকালে সিকৃবির বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী ঘোরি মো. ওয়াসিম আব্বাসসহ ১১ শিক্ষার্থী ময়মনসিংহ থেকে সিলেটগামী উদার পরিবহনের একটি বাসে (ঢাকা মেট্রো-ভ-১৪-১২৮০) ওঠেছিলেন। তারা হবিগঞ্জের নবীনগরের দেবপাড়ায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। ওই বাসযোগে তারা শেরপুর আসেন। অভিযোগ ওঠেছে, ভাড়া নিয়ে বাগবিতন্ডার জেরে শেরপুরে ওয়াসিমকে হেলপার ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। পরে চালক দ্রুত বাসটি চালিয়ে দেন ওয়াসিমের ওপর দিয়ে। এতে গুরুতর আহত তিনি। তাকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিমানে নতুন পরিচালক

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে নতুন পরিচালক (প্রশাসন) নিয়োগ দিয়েছে সরকার। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদকে প্রেষণে ওই পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
গত ৪ মাস ধরে ওই পদে ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্বপালন করে আসছেন বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টারের (বিএটিসি) প্রিন্সিপাল পার্থ কুমার পণ্ডিত।
সোমবার বিকালে নতুন পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন জিয়াউদ্দিন আহমেদ।
সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে টিকিট বিক্রি ও কার্গোতে অনিয়ম এবং দুর্নীতির প্রমাণের পর এই রদবদলের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়।
ইতিহাসের জঘন্যতম নৃশংসতার ভয়াল ২৫ মার্চ

ইতিহাসের জঘন্যতম নৃশংসতা। শুধু বাঙালি জাতির ইতিহাসে নয়, মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক কলঙ্কিত দিন। তাইতো বাঙালি জাতির জীবনে আজ এক বিভীষিকাময় বেদনাবিধুর রাত। আজ ২৫ মার্চ।
১৯৭১ সালের এইদিনের মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী উদ্যত হয় বাঙালিদের কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে। নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অপারেশন সার্চলাইটের নীলনকশা অনুযায়ী হত্যাযজ্ঞ চালায় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে।
বর্বর হত্যাযজ্ঞের এ দিনটি এখন জাতীয় ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। দিবসটি আন্তর্জাতিকভাবে পালনের জন্য স্বীকৃতি আদায়ের ক্ষেত্রেও কাজ চলছে। আর গণহত্যা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার জন্য প্রাণ উৎসর্গকারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। সেই সঙ্গে প্রাণ উৎসর্গকারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা অর্পন করছেন সমগ্র বাংলা ভাষা-ভাষী মানুষও।
অনেকের মতে, ২৫ মার্চের গণহত্যা শুধু এক রাতের হত্যাকাণ্ডই ছিল না, এটা মূলত বিশ্ব সভ্যতার জন্য এক কলঙ্কজনক ও জঘন্যতম গণহত্যার সূচনা। অস্ট্রেলিয়ার 'সিডনি মর্নিং হেরাল্ড' পত্রিকার ভাষ্য মতে, শুধুমাত্র ২৫ মার্চ রাতেই বাংলাদেশে প্রায় এক লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, যা গণহত্যার ইতিহাসে এক জঘন্যতম ভয়াবহ ঘটনা।'
মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন ২৫ মার্চের রাত সম্পর্কে লিখেছিলেন, 'ঢাকায় ঘটনার শুরু মাত্র হয়েছিল। সমস্ত পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে সৈন্যরা বাড়িয়ে চললো মৃতের সংখ্যা। জ্বালাতে শুরু করলো ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট। লুট আর ধ্বংস তাদের নেশায় পরিণত হলো। রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক-শেয়ালের খাবারে পরিণত হলো। বাংলাদেশ হয়ে উঠলো শকুনতাড়িত শ্মশান ভূমি।'
ইতিহাস বলে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান ও জুলফিকার আলী ভুট্টো মিলে ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করতে থাকেন। সেই সময় বাঙালিদের ওপর সামরিক হত্যাযজ্ঞের নীলনকশা চূড়ান্ত করা হয়। আর জল্লাদ ইয়াহিয়ার নির্দেশে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের আঁধারে সেনানিবাস থেকে বেরিয়ে আসে পাকিস্তানি হানাদারদের ট্যাংক আর সাঁজোয়া যানের বহর।
আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুমন্ত সাধারণ মানুষের ওপর। পাকবাহিনীর ট্যাংক, কামান আর মেশিনগানের গোলায় প্রাণ হারায় হাজার হাজার কিশোর, তরুণ, যুবক থেকে শুরু করে সববয়সী মানুষ। নারকীয় এক হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে হিংস্র হায়েনারা। যেখানে যাকে পেয়েছে তাকেই গুলি করে হত্যা করেছে।
হানাদার বাহিনী হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে পিলখানার ইপিআর সদর দফতর, রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রাবাস, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল আর ইকবাল হলে শুরু করে নির্বিচারে গণহত্যা। চলতে থাকে লুটপাট, লুণ্ঠন। রক্তে রঞ্জিত হয় ঢাকার রাজপথ।
শুধু হত্যাই নয়, আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয় শহরের বিভিন্ন এলাকায়। একই সঙ্গে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় অন্যান্য বড় শহরেও। মানবজাতির ইতিহাসে এমন বর্বরতার দ্বিতীয় কোনো নজির নেই। গোটা বাঙালি জাতি এ মানবতাবিরোধী হামলায় হতভম্ব হয়ে গেলেও তীব্র এক প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পুলিশ ও ইপিআর সদস্যরা বীরত্বের সঙ্গে কঠিন প্রতিরোধ করে।
২৫ মার্চ রাতের শেষ প্রহর তথা ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন। দেশের সর্বত্র শুরু হয় সশস্ত্র সংগ্রাম ও স্বাধীনতা যুদ্ধ। অকুতোভয় বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জন করা হয় একটি স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি; বাংলাদেশ।
দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যৌথ উদ্যোগে ‘গণহত্যা দিবস’ পালন করা হবে। দিবসটির মর্যাদা অনুযায়ী সভা, সমাবেশ, র্যালি, আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ নানান কর্মসূচি পালন করবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ ’৭১সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।
নন এমপিও শিক্ষকদের কর্মসূচি স্থগিত

শিক্ষামন্ত্রীর দীপু মনির আশ্বাসের পর এমপিওভুক্তির দাবিতে চলা অবস্থান কর্মসূচি এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন নন এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা।
আজ রোববার বিকেলে দীপু মনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তাঁদের আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের বৈঠকের ব্যবস্থা করবেন।
এমপিওর দাবিতে গত তিন দিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। আজ বিকেলে সেখানে উপস্থিত হন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
দীপু মনি দাবি মেনে নেওয়ার জন্য দেড় মাসের মতো সময় চান।
গত বছরও একই দাবিতে নন এমপিও শিক্ষকেরা আন্দোলন করেন।
টাঙ্গাইলে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২

টাঙ্গাইলের বাসাইলে নিয়ন্ত্রণহীন মোটর সাইকেল গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দুই যুবকের প্রাণ গেছে। শনিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার হাকিমপুর-জশিহাটী সড়কের তালতলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে বাসাইল থানার ওসি এসএম তুহীন আলী জানান।
নিহতরা হলেন- উপজেলার কামুটিয়া গ্রামের লাল খানের ছেলে শাওন খান (২৭) এবং একই এলাকার বিল্লালের ছেলে জামিল (২৫)।
ওসি তুহীন বলেন, শাওন ও জামিল মোটর সাইকেলে করে একঢালা এলাকায় উপজেলা নির্বাচনের ভাইস চেয়ারমান পদপ্রার্থী খান বাহাদুরের জনসভার যাচ্ছিলেন।
তালতলা এলাকায় তাদের মোটর সাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাল গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এ সময় দুই আরোহী ঘটনাস্থলেই মারা যান।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের লাশ উদ্ধার করে বলে জানান ওসি।
এবার থার্টিফার্স্টে কোনো অনুষ্ঠান না করার আহ্বান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে এবার থার্টিফার্স্টে কোনো অনুষ্ঠান না করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এ সময় বাড়ির ছাদেও কোনো অনুষ্ঠান না করার অনুরোধ জানান তিনি।
রোববার সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইটে কোথাও কোনো আতশবাজি বা পটকা ফোটানো যাবে না। নির্বাচনের কারণে এবার উন্মুক্ত স্থানের পাশাপাশি বাসা-বাড়ির ছাদেও থার্টিফাস্ট নাইটের অনুষ্ঠান করা যাবে না।
তিনি বলেন, আগের দিনই দেশের একাদশ জাতীয় নির্বাচন হবে এবং পর দিন ইংরেজি বর্ষ বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা। এজন্য কোনো আয়োজন না রাখার তাগিদ দেন তিনি।
তবে নির্বাচনের আগে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসব বড়দিনে প্রতিটি গির্জায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
নির্বাচনে দায়িত্ব পেলে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করবে সেনাবাহিনী: সেনাপ্রধান প্রকাশ: ৪ ঘণ্টা আগে

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, 'আগামী মাসে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সেনাবাহিনীকে সম্ভবত নিয়োগ করা হবে। নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হলে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করবে সেনাবাহিনী। আমরা অতীতেও এই দায়িত্ব পালন করেছি। আমরা পেশাদারিত্বের সঙ্গে অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে সেই দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করব।'
রোববার দুপুরে সাভার সেনানিবাসের সিএমপিসিঅ্যান্ডএসের প্যারেড গ্রাউন্ডে অ্যাডহক ১১ বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টকে (মেকানাইজড) রেজিমেন্টাল কালার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সেনাপ্রধান বলেন, 'দেশের উন্নয়নের অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে নির্বাচন কমিশনের যে কোনো নির্দেশ পালনে সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন উপহার দিতে নির্বাচন কমিশনের সব নির্দেশনা পালনের জন্য সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে হবে- সেনাপ্রধান হিসেবে এটা আমার নির্দেশ।'
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব দরবারে উন্নয়নশীল দেশের যে স্ট্যাটাস আমরা পেয়েছি, তা বাস্তবায়ন করতে হলে দেশের আর্থসামাজিক, শিক্ষা, অবকাঠামোসহ সব ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে, তা ধরে রাখতে হবে। আর এ অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে পারলে ২০২৪ সাল নাগাদ উন্নয়নশীল দেশের স্ট্যাটাস স্থায়ী হবে। তাই দেশে সুষ্ঠু পরিবেশ ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি রক্ষার যদি কোনো দায়িত্ব পালন করতে হয়, সেনাবাহিনী তা করবে। এজন্য দেশ ও জনগণের স্বার্থে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের জন্য সেনা সদস্যদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
সৈনিকদের উদ্দেশে জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। ২০২১ সালের রূপকল্পের ধারাবাহিকতায় ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফোর্সেস গোল্ড ২০৩০-এর আলোকে সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বর্তমানে সেনাবাহিনীতে নিয়মিত, ডিভিশন সাপোর্ট, মেকানাইজড ও প্যারা- এই চার প্রকারের পদাতিক ব্যাটালিয়ন প্রচলিত রয়েছে। এ ছাড়া গত ৮ থেকে ৯ বছরে সমরাস্ত্রসহ আরও নতুন তিনটি ডিভিশন সংযোজন হওয়া বিরল ঘটনা বলেও মন্তব্য করেন সেনাপ্রধান।
এ সময় প্যারেড গ্রাউন্ডে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে প্রধান অতিথি সেনাপ্রধানকে স্বাগত জানান প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসাররা, জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা, নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও সাভার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মো. আকবর হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান, পৌর মেয়র হাজী আবদুল গনি ও জেলা পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এরপর সেনাপ্রধান আনুষ্ঠানিকভাবে সাভার ডিওএইচএসের ভেতরে সেনা স্কুল ও কলেজ, লেক-১ ও লেক-২ এবং কেন্দ্রীয় মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি ডিওএইচএসে একটি বকুল ফুলের চারা রোপণ করেন। পরে তিনি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অধীনে ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেনা শপিং কমপ্লেক্স উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া পাথালিয়া ইউনিয়নের খেজুরটেক এলাকায় সেনা রেসিডেনসিয়াল এরিয়ার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় ১৯৯৯ সালে সেনাবাহিনীর কলেবর বৃদ্ধিসহ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পাশাপাশি দ্বিতীয় পদাতিক রেজিমেন্ট হিসেবে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়।
নাজমুল হুদাকে আত্মসমর্পণ করতেই হচ্ছে

ঘুষ গ্রহণের মামলায় বিএনপি দলীয় সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকে চার বছর কারাদণ্ডাদেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে।
রোববার সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে ৬৭ পৃষ্ঠার রায়টি প্রকাশ পায়। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি করা হলে তা জাতীয় স্বার্থ, অর্থনীতি ও দেশের ভাবমূর্তির জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
ঘুষ গ্রহণের মামলায় দণ্ডিত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও আসন্ন সংসদ নির্বাচনে তার অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী একজন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্ট থেকে চার বছরের সাজাপ্রাপ্ত নাজমুল হুদা।
সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তিনি (নাজমুল হুদা) জাতীয় নির্বাচনে অযোগ্য। সেখানে বলা আছে, 'নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অনুণ্য দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইলে এবং মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।'
জানা যায়, ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচন করার জন্য গত ৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। ওইদিন বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে নাজমুল হুদার একজন প্রতিনিধি মনোনয়ন ফরমটি সংগ্রহ করেন।
২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহনের মামলায় ২০০৭ সালের ২৭ আগষ্ট ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকে সাত বছর ও তার স্ত্রী অ্যাডভোকেট সিগমা হুদাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আপিল করেন। শুনানি শেষে ২০১১ সালের ২০ মার্চ হাইকোর্ট তাদের খালাস দেন।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাষ্ট্রপক্ষ। সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় বিচার করার নির্দেশ দেন। পুন:শুনানি শেষে গত বছরের ৮ নভেম্বর বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ নাজমুল হুদার সাত বছর সাজা থেকে কমিয়ে চার বছর এবং তিন বছর কারাদণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে সিগমা হুদা যতটুকু সময় সিগমা হুদা কারাগারে ছিলেন, তা সাজাভোগ হিসেবে গণ্য হবে বলে রায়ে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে নাজমুল হুদাকে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট।
রায়ের কপি পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে নাজমুল হুদাকে বিচারিক আদালত আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু নাজমুল হুদা আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিট করেন। রিটটি গত বছরের ১০ ডিসেম্বর খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এরপর তিনি আত্মসমর্পণ ছাড়াই আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। এ বছরের ৭ জানুয়ারি সেই আবেদনও খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। ফলে এ মামলায় নিম্ন আদালতে নাজমুল হুদাকে আত্মসমর্পণ করতেই হচ্ছে।
হাইকোর্টের দেয়া রায়ে বলা হয়, দুর্নীতি একটি অভিশাপ। সমাজের সবক্ষেত্রে দুর্নীতি দেখা যায়। দুর্নীতির সমাজের নৈতিক অবস্থান নষ্ট করে এবং সরকারি কর্মচারীর দুর্নীতি কেবল নৈতিক অবস্থানই নষ্ট করে না বরং এটি জাতীয় অর্থনীতি ও জাতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। সরকারের উচ্চপর্যায়ে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি করা হলে তা জাতীয় স্বার্থ, অর্থনীতি ও দেশের ভাবমূর্তির জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
রায়ে আদালত বলেন, আপিলের কোনো সারবত্তা পাওয়া যায়নি। আপিল খারিজ করা হলো। বাকি সাজা ভোগ করতে বিচারিক আদালতের রায়ের কপি গ্রহণের ৪৫ দিনের মধ্যে আপিলকারী (নাজমুল হুদা) বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন। এতে ব্যর্থ হলে বিচারিক আদালত তাঁর গ্রেফতার নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।
ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে ২০০৭-০৮ সালে (তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়) তিনটি মামলা হয়। একটি জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে। দ্বিতীয়টি এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা হিসাবে ৬ লাখ টাকা অবৈধভাবে নেয়ার অভিযোগে। তৃতীয়টি আকতার হোসেন লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর জাহির হোসেনের কাছ থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগে ২০০৭ সালের ২১ মার্চ ধানমন্ডি থানায় মামলায়। প্রথম মামলাটিতে নাজমুল হুদাকে ১২ বছর সাজা দেন নিম্ন আদালত। আপিলে হাইকোর্ট প্রথম মামলাটি খারিজ করে তাকে শাস্তি থেকে অব্যাহতি দেন। দ্বিতীয় মামলাটির বিচার কার্যক্রম আদালতের আদেশে স্থগিত আছে।
ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বিভিন্ন মেয়াদে খাদ্য, তথ্য এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিএনপির সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হলে তাকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কার আদেশের পরও বিএনপির পরিচয়েই রাজনীতিতে থাকার চেষ্টা করেন। অবশেষে ২০১২ সালে তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন।
এরপর বাংলাদেশ ন্যাশনালিষ্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), বাংলাদেশ ন্যাশনালিষ্ট অ্যালায়েন্স (বিএনএ), বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি (বিএমপি) এবং সর্বশেষ 'তৃণমূল বিএনপি' গঠন করেন। সম্প্রতি এ দলটিকে নিবন্ধন দিতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
গণমাধ্যমে শিশু আসামির পরিচয় প্রচার বন্ধে রিট

শিশু আদালতে বিচারাধীন মামলায় শিশু আসামির নাম-ঠিকানা, ছবিসহ তার পরিচয় গণমাধ্যমে প্রচার-প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন রোববার হাইকোর্টের সংশ্নিষ্ট শাখায় আবেদনটি করেন।
রিটে শিশু আইন-২০১৩ এর ২৮ ধারা অনুযায়ী শিশু অপরাধীর পরিচয় গণমাধ্যমে প্রচার-প্রকাশে কেন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে না- জানতে রুল জারির পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চাওয়া হয়েছে।
রিটে আইন সচিব, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি, উচ্চ আদালতে সাংবাদিকদের সংগঠন ল রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি এবং ডেইলি স্টার সম্পাদককে বিবাদী করা হয়েছে।
সাইয়েদ্যুল হক সাংবাদিকদের বলেন, শিশু আইন অনুসারে বিচারাধীন মামলায় শিশু আসামির এমন কোনো বর্ণনা গণমাধ্যমে প্রচার-প্রকাশ করা যাবে না, যাতে শিশু অপরাধী বা বিচারের সঙ্গে সংশ্নিষ্ট শিশুটির পরিচয় স্পষ্ট হয়ে যায়। গণমাধ্যমে শিশুর পরিচিতি তুলে ধরতে চাইলে অবশ্যই শিশু আদালতের অনুমতি নিতে হবে। এ আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে গত ৫ নভেম্বর ডেইলি স্টারে 'বয় গেটস টেন ইয়ার্স ফর কিলিং ক্লাসমেটস' শিরোনামে শিশু আসামির পরিচয়সহ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়েছে।
বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে। সোমবার রিটটি শুনানির কার্যতালিকায় আসতে পারে।
খালেদা জিয়াকে নিয়ে মুখ খুললেন এসকে সিনহা

খালেদা জিয়ার মামলাকে একটি অমীমাংসিত বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা বলেছেন, অমীমাংসিত বিষয় নিয়ে আমরা মন্তব্য করতে পারি না।মঈনুদ্দিন নাসির নামে এক দর্শকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেখানে প্রধান বিচারপতি কোনো বিচার পান না, সেখানে অন্য লোকদের অবস্থা কী হবে, সেটি স্রষ্টা ভালো জানেন।
শনিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসির’ মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানেই তিনি এ আশ্রয় প্রার্থনা করেন।যুক্তরাষ্ট্রে নিজের রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে সিনহা বলেন, আমার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আমি লন্ডনের হাউস অব কমনসে বক্তৃতা দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছি। জেনেভা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকেও আমন্ত্রণ এসেছে। কিন্তু যেতে পারছি না।এ সময় উইলিয়াম বি মাইলাম বলেন, এটি একটি অরাজনৈতিক বৈঠক। আমি নিজেও অরাজনৈতিক। আমি এ বিচারককেও চিনি।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং কিছু পর্যবেক্ষণের কারণে রাজনৈতিক তোপের মুখে ২০১৭ সালের অক্টোবরের শুরুতে ছুটিতে যান তখনকার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। পরে বিদেশ থেকেই তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এর এক বছরের মাথায় তিনি বিদেশে বসে ‘এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ শিরোনামে বইটি লিখেছেন, যা নিয়ে বাংলাদেশের মতো প্রবাসে বাংলাদেশিদের মধ্যেও আলোচনা চলছে।বইতে সিনহা লিখেছেন- ২০১৭ সালে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পক্ষে ঐতিহাসিক এক রায় দেয়ার পর বর্তমান সরকার আমাকে পদত্যাগ করতে এবং নির্বাসনে যেতে বাধ্য করেছে।
এর এক বছরের মাথায় তিনি বিদেশে বসে ‘এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ শিরোনামে বইটি লিখেছেন, যা নিয়ে বাংলাদেশের মতো প্রবাসে বাংলাদেশিদের মধ্যেও আলোচনা চলছে।বইতে সিনহা লিখেছেন- ২০১৭ সালে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পক্ষে ঐতিহাসিক এক রায় দেয়ার পর বর্তমান সরকার আমাকে পদত্যাগ করতে এবং নির্বাসনে যেতে বাধ্য করেছে।
সাবেক বিচারপতি জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপদ বোধ করছেন না। তার ভাষ্য- আমি এত ভীত থাকি যে, আমি ২৪ ঘণ্টা বাসাতেই থাকি।সরকারি একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রে তার বাসা সবসময় পর্যবেক্ষণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা আমার বাসায় যায় তাদের ছবি তোলা হয়।উৎসঃ যুগান্তর
খবরটি শেয়ার করুন
খবরটি শেয়ার করুন