ভাঁওতাবাজির জন্য সরকারকে গোল্ড মেডেল দেয়া উচিত এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, এতদিন পরে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে যাচ্ছে সেখানে এতবারের সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রী তিনি জেলে থাকবেন, তাকে পরিত্যক্ত পুরনো কারাগারে অপমান করা হবে, আরেকটি দলের নেত্রী সরকারের প্রধান হয়ে নির্বাচন করবেনÑ তা মেনে নেয়া যায় না।
তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করবেন না। বরং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
ভোটকেন্দ্র পাহারা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড. কামাল হোসেন বলেন, আরো বেশি সঙ্ঘবদ্ধ ও সচেতন হতে হবে, তাহলে গুণ্ডা-পাণ্ডারা দুর্বল হয়ে যাবে। একবার নির্বাচন বয়কট করে ভুগতে হয়েছে। ওরা যত ১০ নম্বরই করুক, হাজার হাজার ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে। ঘরে ঘরে গিয়ে জনগণকে বোঝাতে হবে। জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের মহাসমাবেশে গতকাল প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন ড. কামাল হোসেন। খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি এবং ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি মেনে নিতে সরকারকে আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়া হয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হবে। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানান অন্য বক্তারা।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে গতকাল জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে আইনজীবীদের এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সারা দেশের আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধিরা মহাসমাবেশে অংশ নেন। বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহারের দাবি করে মুহুর্মুহু স্লোগান দেন আইনজীবীরা। একপর্যায়ে কারাবন্দী খালেদা জিয়ার ওপর লেখা ‘এসো ঐক্য, এসো ঐক্য, দেশমাতার ডাকে ঐক্য’ গান গেয়ে শুনান কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়ার পরিচালনায় মহাসমাবেশে ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, মীর নাছির উদ্দিন, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান এম এ রকীব, গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোহাম্মদ শাহজাহান, অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, মজিবুর রহমান সারোয়ার, বোরহানউদ্দিন, বদরুদ্দোজা বাদল, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, পিপলস লীগের সভাপতি আইনজীবী গরীবে নেওয়াজ, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, খোরশেদ মিয়া, মহসিন মিয়া, গোলাম মোস্তফা খান, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, শফিউদ্দিন ভূঁইয়া, মনসুর রহমান, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, আইনজীবী মনির হোসেন, গোলাম মোস্তফা খান, ইসলামিক ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের এস এম কামালউদ্দিন, জেএসডির কে এম জাবির, এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান, আইয়ুব আলী আশ্রাফী, আনিছুর রহমান খান, ড. রফিকুল ইসলাম মেহেদী, জামালপুরের ওয়ারেস আলী, কুমিল্লার কাইমুল হক রিংকুসহ বিভিন্ন বারের আইনজীবীরা বক্তব্য দেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, সরকার পাঁচ বছর ধরে ভাঁওতাবাজি করেছে। দ্রুত নির্বাচন দেয়ার কথার অর্থ কী ৫ বছর? আলহামদুলিল্লাহ আরেকটি নির্বাচনের কথা বলেছে। এবার বলবÑ আমাদের দাবি মানতে হবে। ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারলে তো স্বাধীনতার ওপর আঘাত করা হবে। বাংলাদেশকে আমরা পরাধীন করতে পারি না। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তাদের সাথে বেঈমানী করতে পারি না। সরকার যেনতেনভাবে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করছে। ১৬ কোটি মানুষ এক দিকে-ওরা এক দিকে। ভাঁওতাবাজির জন্য সরকারকে গোল্ড মেডেল দেয়া উচিত। সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে নিজেরাই প্রতি মুহূর্তে সংবিধান লঙ্ঘন করছে। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই। আদমের সন্তানের তো লজ্জাবোধ থাকা উচিত। তারা কী মানুষ না অন্য কিছু হয়ে গেছে? তাদের লজ্জাবোধ ফিরে আসা উচিত। ২০১৪ সালে নির্বাচন ছাড়াই ১৫৪ জন ঘোষিত প্রার্থী এমপি হলেন। তাদের এমপি নয় জিপি (ঘোষিত প্রার্থী) বলা দরকার। ক্ষমতায় থেকে যে কেউ পার পাবে এটা ভুলে যাও। সরকার আর পার পাবে না।
ভোটযুদ্ধে নামার জন্য সবাইকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যখন আমরা কোথাও দাঁড়াতে পারি না, আমাদের কথা বলতে দেয়া হয় না, নির্বাচনের জন্য ক্যাম্পেইন করতে দেয় না, আমাদের নেতাকর্মীদের মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে অথবা তারা পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে; তখন আমরা বলছি, না এটাকেই আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। এ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের সাথে নিয়ে আমরা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এ দানবকে পরাজিত করব। আমাদের হাতে সময় খুব কম। যদি জাতিকে বাঁচাতে হয়, বাংলাদেশ ও আমাদের মানুষকে যদি বাঁচাতে হয়, আমাদের স্বাধীনতাকে যদি রক্ষা করতে হয়; তাহলে এটাই উপযুক্ত সময়। আসুন সবাই মিলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটযুদ্ধে নেমে পড়ি। এই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা তাদের পরাজিত করি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, অ্যাডভোকেট নিপুণ রায়সহ আইনজীবীরা সরকারের মিথ্যা মামলায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এমন রাষ্ট্রে বাস করছি যে, আইনজীবীরা পর্যন্ত মিথ্যা মামলায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, কষ্ট করতে হচ্ছে। আদালতেও আজকে আশ্রয় নেই। খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায় সাজা দেয়া হয়েছে। রায় তো ন্যায় হতে হবে। একটি মন্ত্রণালয়ের সচিবের কথায় চলেন বিচারেকরা। গায়েবি মামলা দেয়া হচ্ছে, সাড়ে চার হাজার গায়েবি মামলা। ড. কামাল হোসেন এটা কোর্টে তুলেছেন এখন পর্যন্ত আমরা সুরাহা পাইনি। যেই তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে তার পর থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৪০০ গায়েবি মামলা হয়েছে। কিভাবে নির্বাচন করবেন? এভাবেই করতে হবে। এভাবেই মানুষকে নিয়ে এগিয়ে গিয়ে তাদের এই নির্যাতন, তাদের এই নিপীড়ন, তাদের এই নীলনকশা-চক্রান্তকে বানচাল করে দিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে ভোট বিপ্লব ঘটিয়ে আমরা জয়লাভ করব ইনশা আল্লাহ।
‘সব সাম্প্রদায়িক শক্তি এখন ধানের শীষ’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ওবায়দুল কাদেরের কথায় আমাকে আঘাতও করেছে। তার কথায় ড. কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্না, আমাদের মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, অলি আহমেদÑ যারা মুক্তিযোদ্ধা, আমি সাম্প্রদায়িক শক্তি। এই কথার আমি প্রতিবাদ করছি। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আপনারাই প্রশ্রয় দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন। জাতি জানে কখন কি করেছেন। কারা একসাথে বসে যুদ্ধাপরাধীদের সাথে আন্দোলন করেছেন তা সবাই জানেন। এখনো তাদের সাথে বসে কওমি জননী হয়ে গেছেন এটা সবাই জানেন।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো সুষ্ঠুভাবে করতে পারেনি, জাতীয় নির্বাচন কিভাবে সুষ্ঠু করবে? সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ৩০ শতাংশ ভোটও পাবে না। ইসিকে সাবধান করে দিয়ে তিনি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করুন, সবাইকে সমান সুযোগ দিতে হবে, অন্যথায় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ৭ দফা দাবিতে ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলন চলবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করবেন না। বরং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
ভোটকেন্দ্র পাহারা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড. কামাল হোসেন বলেন, আরো বেশি সঙ্ঘবদ্ধ ও সচেতন হতে হবে, তাহলে গুণ্ডা-পাণ্ডারা দুর্বল হয়ে যাবে। একবার নির্বাচন বয়কট করে ভুগতে হয়েছে। ওরা যত ১০ নম্বরই করুক, হাজার হাজার ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে। ঘরে ঘরে গিয়ে জনগণকে বোঝাতে হবে। জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের মহাসমাবেশে গতকাল প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন ড. কামাল হোসেন। খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি এবং ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি মেনে নিতে সরকারকে আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়া হয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হবে। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানান অন্য বক্তারা।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে গতকাল জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে আইনজীবীদের এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সারা দেশের আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধিরা মহাসমাবেশে অংশ নেন। বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহারের দাবি করে মুহুর্মুহু স্লোগান দেন আইনজীবীরা। একপর্যায়ে কারাবন্দী খালেদা জিয়ার ওপর লেখা ‘এসো ঐক্য, এসো ঐক্য, দেশমাতার ডাকে ঐক্য’ গান গেয়ে শুনান কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়ার পরিচালনায় মহাসমাবেশে ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, মীর নাছির উদ্দিন, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান এম এ রকীব, গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোহাম্মদ শাহজাহান, অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, মজিবুর রহমান সারোয়ার, বোরহানউদ্দিন, বদরুদ্দোজা বাদল, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, পিপলস লীগের সভাপতি আইনজীবী গরীবে নেওয়াজ, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, খোরশেদ মিয়া, মহসিন মিয়া, গোলাম মোস্তফা খান, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, শফিউদ্দিন ভূঁইয়া, মনসুর রহমান, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, আইনজীবী মনির হোসেন, গোলাম মোস্তফা খান, ইসলামিক ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের এস এম কামালউদ্দিন, জেএসডির কে এম জাবির, এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান, আইয়ুব আলী আশ্রাফী, আনিছুর রহমান খান, ড. রফিকুল ইসলাম মেহেদী, জামালপুরের ওয়ারেস আলী, কুমিল্লার কাইমুল হক রিংকুসহ বিভিন্ন বারের আইনজীবীরা বক্তব্য দেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, সরকার পাঁচ বছর ধরে ভাঁওতাবাজি করেছে। দ্রুত নির্বাচন দেয়ার কথার অর্থ কী ৫ বছর? আলহামদুলিল্লাহ আরেকটি নির্বাচনের কথা বলেছে। এবার বলবÑ আমাদের দাবি মানতে হবে। ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারলে তো স্বাধীনতার ওপর আঘাত করা হবে। বাংলাদেশকে আমরা পরাধীন করতে পারি না। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তাদের সাথে বেঈমানী করতে পারি না। সরকার যেনতেনভাবে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করছে। ১৬ কোটি মানুষ এক দিকে-ওরা এক দিকে। ভাঁওতাবাজির জন্য সরকারকে গোল্ড মেডেল দেয়া উচিত। সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে নিজেরাই প্রতি মুহূর্তে সংবিধান লঙ্ঘন করছে। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই। আদমের সন্তানের তো লজ্জাবোধ থাকা উচিত। তারা কী মানুষ না অন্য কিছু হয়ে গেছে? তাদের লজ্জাবোধ ফিরে আসা উচিত। ২০১৪ সালে নির্বাচন ছাড়াই ১৫৪ জন ঘোষিত প্রার্থী এমপি হলেন। তাদের এমপি নয় জিপি (ঘোষিত প্রার্থী) বলা দরকার। ক্ষমতায় থেকে যে কেউ পার পাবে এটা ভুলে যাও। সরকার আর পার পাবে না।
ভোটযুদ্ধে নামার জন্য সবাইকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যখন আমরা কোথাও দাঁড়াতে পারি না, আমাদের কথা বলতে দেয়া হয় না, নির্বাচনের জন্য ক্যাম্পেইন করতে দেয় না, আমাদের নেতাকর্মীদের মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে অথবা তারা পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে; তখন আমরা বলছি, না এটাকেই আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। এ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের সাথে নিয়ে আমরা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এ দানবকে পরাজিত করব। আমাদের হাতে সময় খুব কম। যদি জাতিকে বাঁচাতে হয়, বাংলাদেশ ও আমাদের মানুষকে যদি বাঁচাতে হয়, আমাদের স্বাধীনতাকে যদি রক্ষা করতে হয়; তাহলে এটাই উপযুক্ত সময়। আসুন সবাই মিলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটযুদ্ধে নেমে পড়ি। এই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা তাদের পরাজিত করি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, অ্যাডভোকেট নিপুণ রায়সহ আইনজীবীরা সরকারের মিথ্যা মামলায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এমন রাষ্ট্রে বাস করছি যে, আইনজীবীরা পর্যন্ত মিথ্যা মামলায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, কষ্ট করতে হচ্ছে। আদালতেও আজকে আশ্রয় নেই। খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায় সাজা দেয়া হয়েছে। রায় তো ন্যায় হতে হবে। একটি মন্ত্রণালয়ের সচিবের কথায় চলেন বিচারেকরা। গায়েবি মামলা দেয়া হচ্ছে, সাড়ে চার হাজার গায়েবি মামলা। ড. কামাল হোসেন এটা কোর্টে তুলেছেন এখন পর্যন্ত আমরা সুরাহা পাইনি। যেই তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে তার পর থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৪০০ গায়েবি মামলা হয়েছে। কিভাবে নির্বাচন করবেন? এভাবেই করতে হবে। এভাবেই মানুষকে নিয়ে এগিয়ে গিয়ে তাদের এই নির্যাতন, তাদের এই নিপীড়ন, তাদের এই নীলনকশা-চক্রান্তকে বানচাল করে দিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে ভোট বিপ্লব ঘটিয়ে আমরা জয়লাভ করব ইনশা আল্লাহ।
‘সব সাম্প্রদায়িক শক্তি এখন ধানের শীষ’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ওবায়দুল কাদেরের কথায় আমাকে আঘাতও করেছে। তার কথায় ড. কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্না, আমাদের মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, অলি আহমেদÑ যারা মুক্তিযোদ্ধা, আমি সাম্প্রদায়িক শক্তি। এই কথার আমি প্রতিবাদ করছি। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আপনারাই প্রশ্রয় দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন। জাতি জানে কখন কি করেছেন। কারা একসাথে বসে যুদ্ধাপরাধীদের সাথে আন্দোলন করেছেন তা সবাই জানেন। এখনো তাদের সাথে বসে কওমি জননী হয়ে গেছেন এটা সবাই জানেন।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো সুষ্ঠুভাবে করতে পারেনি, জাতীয় নির্বাচন কিভাবে সুষ্ঠু করবে? সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ৩০ শতাংশ ভোটও পাবে না। ইসিকে সাবধান করে দিয়ে তিনি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করুন, সবাইকে সমান সুযোগ দিতে হবে, অন্যথায় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ৭ দফা দাবিতে ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলন চলবে বলেও জানান তিনি।
0 comments: