স্লো প​য়জনিংয়ের মাধ্যমে যেভাবে হাসিনা দেশ বিক্রি করে দিচ্ছেন ..

শেয়ার করুন প্লিজ

“আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় গেলে দেশ বিক্রি করবে”- এ ধরনের বক্তব্যের বিরুদ্ধে আওয়ামী সরকার বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ করেছে। তাদের দাবি- “দেশ আবার বিক্রি হয় কিভাবে ? এটা অপপ্রচার।”

তবে তারা যাই বলুক, দেশ কিন্তু বিক্রি হয়, এটা সত্যি। তবে দেশ কোন পণ্য নয় যে হাতে তুলে বিক্রি করবে। দেশ বিক্রি করতে হয় ভিন্ন ভিন্ন রূপে, ভাগে ভাগে।

আসলে দেশ হচ্ছে অনেক কিছুর সমন্বয়, দেশের সম্পদ, জনগণ, ব্যবসা-বাণিজ্য, বন্দর-রাস্তাঘাট, ভূমি সবকিছু দেশের অংশ। এই অংশগুলোর মালিকানা যখন বিদেশীদের হাতে চলে যেতে থাকে, তখন বুঝতে হবে দেশ ধিরে ধিরে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এবং আমরা অন্য জাতির ক্রীতদাসে পরিণত হচ্ছি। এ বিষয়ে কয়েকটি উদহরণ দিচ্ছি পড়ে দেখুন-

(১) বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট চূক্তি করেছে বহুজাতিক কোম্পানি সিনজেন্টার সাথে। বাংলাদেশে গোল্ডেন রাইস নামক জিএমও চাল উৎপাদিত হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশে ধানের প্যাটেন্ট থাকবে বিদেশীদের হাতে। বাংলাদেশের কেউ সেই ধান নিয়ে কমবেশি করলে তারা মামলা ঠুকে দিবে। তাদের ট্যাক্স দিয়ে বাংলাদেশে চাষ করতে হবে। ধান চাষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বলে কিছু থাকবে না। অর্থাৎ মাছে-ভাতে বাঙ্গালীর ভাতের রশি থাকবে বিদেশীদের হাতে। এটা কি দেশ বিক্রি নয় ?

(২) বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের বৃহৎ অংশ ভারতের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। দেশী উৎপাদনের খাতগুলো অচল করে বিদ্যুৎ সেক্টর বিদেশ নির্ভর হওয়া কি দেশ বিক্রি নয় ?

(৩) বাংলাদেশে রাস্তায় আপনি চলবেন, এজন্য অন্যকে টাকা দিতে হবে। ভারতীয় কোম্পানি ‘সিমপ্লেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড’ এবং তার এদেশী দালাল ওরিয়ন গ্রুপ বিনা শুল্কে সেই টাকা লুটে নিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা শহরে মধ্যে যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে সেটাতে চড়তেও আপনাকে টাকা দিতে হবে। আপনার যানজটে আটকে, আপনার দেশের জমি নিয়ে বানানো হচ্ছে ফ্লাইওভার, কিন্তু সেটাতে উঠতে আপনাকে চীনের কোম্পানিকে দিতে হবে টাকা। অর্থাৎ নিজের দেশের রাস্তায় চলতে টাকা দিতে হবে বিদেশীকে। এটা এক ধরনের দেশ বিক্রি।

(৪) বাংলাদেশে নতুন করে ১০০টি অথনৈতিক অঞ্চল করা হচ্ছে, যার অধিকাংশ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে বিদেশীদের। দেশী ব্যবসায়ীদের নানাভাবে আটকে বিদেশী ব্যবসায়ীদের হাতে ব্যবসার সুযোগ ছেড়ে দেয়া কি বিদেশের কাছে বিক্রি নয় ?

৫) প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেশের মেধা নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলছে, “দেশে কি এমন মেধাবী আছে যে ২০ মিনিট দেখে প্রশ্নের উত্তর শিখতে পারে ?” যেন তিনি চাইছেনই ২০ মিনিটে মুখস্ত করার মত মেধাবি দেশে না জন্মাক। এভাবে প্রশ্নফাঁস হতে থাকলে দেশে মেধাবী বলে কিছু থাকবে না, তখন মেথার জন্য বাংলাদেশ নির্ভর করবে বিদেশের উপর, আর বাংলাদেশীরা হবে শ্রমিক তথা বিদেশীদের দাস।

৬) ভারতীয় টিভি চ্যানেলের আগ্রাসন, এক ধরনের দেশ বিক্রির ফসল। এগুলো যে সরকারই অনুমোদন করুক না কেন, টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে সাংস্কৃতিকভাবে ভারতের মত করে দেয়া অবশ্যই দেশবিক্রির সামিল।

৭) রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বা রুপপুর পরমাণু কেন্দ্র এক ধরনের দেশ বিক্রি। এত ছোট দেশে এ ধরনের ভয়ঙ্কর পরিবেশবিধ্বংসী স্থাপনা কেউ অ্যালাউ করবে না। মনে রাখেবন, এসব ভয়ঙ্কর স্থাপনায় দুর্ঘটনার দরুণ পরিবেশে নষ্ট হয়ে গেলে আপনার পালানোর কোন যায়গা থাকবে না, কিন্তু ক্ষমতাসীনরা বিদেশে যায়গা-জমি আগেই কিনে রেখেছে, সুতরাং তারা খুব সহজেই পালাতে পারবে।

৮) দেশের পূজিবাজারে বিদেশীদের অবাধ প্রবেশের সুযোগ করে দেয়াও এক ধরনের দেশ বিক্রি। কারণ এতে বিদেশী কোম্পানিগুলো গেমলিং করে দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের লুটে নিয়ে যাবে।


৯) আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় এসে অর্পিত সম্পত্তি আইন পাশ করেছে। এটা স্পষ্ট দেশ বিক্রি। কারণ এর মাধ্যমে ভারতীয় হিন্দুরা বাংলাদেশে এসে জমি দাবি করবে, যার পরিমাণ বাংলাদেশের প্রায় এক-চর্তুথাংশ হতে পারে।

১০) বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরগুলো এতদিন বাংলাদেশে ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করতো। এখন সেটা বিদেশীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের কন্টেইনার বসিয়ে রেখে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কন্টেইনারকে আগে সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এতে অনেক ব্যবসায়ী শিপমেন্ট মিস করে পথে বসে যাচ্ছে। এটাও দেশ বিক্রির অংশ।

১১) সরকারের পরিকল্পনায় আছে, দেশের গ্যাস উত্তোলন করতে বিদেশী কোম্পানি সুযোগ দেয়া হবে এবং তারা সেই গ্যাস রফতানিও করবে। অপরদিকে বাংলাদেশের মানুষকে বিদেশী এলপি গ্যাসে অভ্যস্থ করতে প্ল্যান করেছে সরকার। অর্থাৎ বাংলাদেশে সস্তা গ্যাস বিদেশীরা নিয়ে যাবে, আর বাংলাদেশীরা আমদানি করা উচ্চমূল্যের গ্যাস ব্যবহার করবে।


হয়ত বলতে পারেন, ক্ষমতাসীনরা কেন দেশ বিক্রি করবে ?
উত্তর দুই কারণে-
ক) আর্থিক ভাবে উচ্চ লাভবান
খ) ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিদেশীদের সমর্থন।


ক্ষমতাসীনরা দেশের সম্পদ নিয়ে বিদেশে জমায়। বিদেশে বিভিন্ন সম্পত্তি কিনে রাখে, যেন দেশে বিক্রি শেষ হলে তারা সহজে বিদেশে আরাম আয়েশে জীবন যাপন করতে পারে।







শেয়ার করুন প্লিজ

লেখক : verified_user

0 comments: